ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আলী যাকের

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ২৭ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ২০:০৬, ২৭ নভেম্বর ২০২০
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আলী যাকের

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকের। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বাদ আসর জানাজা শেষে নগরীর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম।

আলী যাকেরের শেষ বিদায়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। আহসান হাবীব নাসিম বলেন—বিকলে সাড়ে ৪টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। প্রিয় অভিনেতাকে শেষ বিদায় জানাতে থিয়েটার, টিভি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকে উপস্থিত হয়েছিলেন।

শুক্রবার সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হয় আলী যাকেরের মরদেহ। সেখানে বিউগলের করুণ সুরে শ্রদ্ধা জানানো হয় এই মুক্তিযুদ্ধাকে। এরপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর থেকে বেলা ১টার দিকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আলী যাকেরের কর্মস্থল এশিয়াটিকে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বনানী কবরস্থানে। বনানী কবরস্থান মসজিদে বাদ আসর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।  

গত চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। চিকিৎসার অংশ হিসেবে থেরাপি চলছিল। গত সপ্তাহে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। পরে কিছুটা সুস্থ হলে গত ২১ নভেম্বর বাসায় নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু পরের দিন আবারো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২৩ নভেম্বর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হলে ফল পজিটিভ আসে। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী।

১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে নটরডেমে ভর্তি হন। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তিনি। এরপর সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। অনার্স পড়াকালেই ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। অনার্স শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালে চলে যান করাচি। সেখানেই প্রথম অভিনয় করেন আলী যাকের। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় ফিরেন তিনি।

১৯৭২ সালের আলী যাকের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেন। একই বছরের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন। এই দলের হয়ে আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে বাদল সরকার নির্দেশিত ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকে অভিনয় করেন আলী যাকের। এটি ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনী।

বর্ণাঢ্য জীবনে দর্শকের ভালোবাসা যেমন কুড়িয়েছেন, তেমনি নন্দিত এই শিল্পীর প্রাপ্তির ঝুলিতে জমা পড়েছে অসংখ্য পুরস্কার। এ তালিকায় রয়েছে—একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক প্রভৃতি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ