ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চলচ্চিত্রে নারীর চলার পথ মসৃণ নয়, পোহাতে হয় দুর্ভোগ

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ৮ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৫:০৭, ৮ মার্চ ২০২১
চলচ্চিত্রে নারীর চলার পথ মসৃণ নয়, পোহাতে হয় দুর্ভোগ

চলচ্চিত্রাঙ্গনে নারী বৈষম্যের শিকার—এ অভিযোগ নতুন নয়। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এই বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। চলচ্চিত্রাঙ্গনে নারীদের অংশগ্রহণ থাকলেও তাদের নানারকম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সোমবার (৮ মার্চ) বিশ্ব নারী দিবস। এ উপলক্ষে চলচ্চিত্রে নারীদের নানা সমস্যা আর সম্ভাবনা নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকজন চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা।

ঢালিউডে চলচ্চিত্র নির্মাণে নারীদের খুব একটা দেখা যায় না। কেউ কেউ দু-একটি সিনেমা নির্মাণ করে বিভিন্ন কারণে হারিয়ে যান। কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতা নার্গিস আক্তার প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও নিয়মিত সিনেমা নির্মাণ করে যাচ্ছেন। পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার এবং প্রযোজক হিসেবেও পরিচিত। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি মনে করেন, চলচ্চিত্রে নারীদের চলার পথ মসৃণ নয়।

নাসরিন আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি মনে করি নারী নির্মাতা হিসেবে আমার সংগ্রামটা একটু বেশি করতে হয়। এখন পর্যন্ত আটটি সিনেমা নির্মাণ করেছি। এর মধ্যে তিনটি নিজেই প্রযোজনা করেছি। অর্থলগ্নিকারী সাধারণত নারী নির্মাতা দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করাতে চান না। তারা হয়তো মনে করেন নারীদের মেধা কম, কাজ ধীর গতিতে হবে, ভালো কিছু নির্মাণ করতে সক্ষম হবে না। তারা লোকসানে পড়বে। অথচ আমি নারী নির্মাতা হিসেবে পুরুষ নির্মাতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি।’

চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপি। চলচ্চিত্রের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। দর্শকদের ভালোবাসার পাশাপাশি পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা। কিন্তু চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে তাকে নানা সমস্যার মুখামুখি হতে হয়েছে। রাইজিংবিডিকে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘শুধু চলচ্চিত্রে নয়, নারীদের সব জায়গায় সমস্যায় পড়তে হয়। চলচ্চিত্রে কাজ করতে এসে আমিও অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছি। খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায়—ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, ছুরিকাঘাতসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার নারী। আসলে মেয়েরা কোথাও নিরাপদ নয়।’
 
ঢাকাই চলচ্চিত্রে নারী শিল্পীদের নোংরা রাজনীতির শিকার হতে হয়। বিষয়টি উল্লেখ করে পপি বলেন, ‘সিনেমার পর্দায় নায়িকাদের দেখে অনেকেই প্রেমে পড়েন। প্রিয় নায়িকাকে দেখার জন্য টিকিট কেটে হলে যান। অথচ এই নারী শিল্পীরা চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে নানারকম সমস্যার মুখামুখি হন। নারী শিল্পীদের নোংরা রাজনীতির শিকার হতে হয়। যখন মনে হয়েছে, সিনেমাটিতে নোংরা কিছু রয়েছে, তখন সিনেমাটি ছেড়ে দিয়েছি। এত সমস্যার পরও নায়কের তুলনায় নায়িকাদের পারিশ্রমিক অনেক কম। এই বৈষম্য কেন থাকবে?’

চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি এরই মধ্যে বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন। নারী প্রধান একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু এ অভিনেত্রী মনে করেন, চলচ্চিত্রে নারীরা সমান সুবিধা পাচ্ছেন না। ববি বলেন, ‘আমাদের দেশে নায়ক নির্ভর সিনেমা বেশি নির্মিত হচ্ছে। পর্দায় নায়কের উপস্থিতি বেশি। আমার সৌভাগ্য হয়েছে কয়েকটি নায়িকা প্রধান সিনেমায় অভিনয় করার। সমাজের অন্যান্য স্থানের মতো নারীরা চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে সমস্যার মুখামুখি হয়। নারীরা তাদের সেরাটা দিচ্ছেন। কিন্তু পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে পাচ্ছেন কম। নারী নির্ভর সিনেমা এক সময় বাজিমাত করেছে। এখন নারী নির্ভর সিনেমা হয় না বললেই চলে।’

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়