ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে শুটিং সেটে এক রুমে থাকতেন সোহেল-দিতি

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ৯ জুন ২০২১   আপডেট: ১৪:০১, ১১ জুন ২০২১
সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে শুটিং সেটে এক রুমে থাকতেন সোহেল-দিতি

নব্বইয়ের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। দিতির সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। পর্দার প্রেমের মতো বাস্তবেও দুজন পরস্পর প্রেমে মজেছিলেন। যদিও শুরুর দিকে এই ঘটনা তারা অনেকদিন গোপন রেখেছিলেন। এমনকি বিয়ের খবরও তারা চেপে গিয়েছিলেন বেমালুম।

বিয়ের পর শুটিং সেটে গিয়েও গোপনে একই রুমে থাকতেন দিতি-সোহেল চৌধুরী। বিষয়টি তখন ঘনিষ্ঠ দু’একজন ছাড়া কেউ জানতো না। কিন্তু হঠাৎ একদিন বিষয়টি ধরে পড়ে যায় চিত্রসাংবাদিক ইমরুল শাহেদের কাছে। সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, ‘‘আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘হীরামতি’ ছবির সেটে গিয়েছিলাম। লোকেশন ছিল সিলেট। গিয়ে দেখি শুটিং ইউনিট দুই ভাগে রাখা। একটি অংশ জৈন্তা বাজারে, আরেকটি অংশ তামাবিল যাওয়ার পথে টিলার উপর নলজুরি ডাকবাংলোতে। আমরা কয়েকজন ছিলাম ডাকবাংলোতে। কিন্তু শোয়ার উপযোগী একটি খাট ছিল শুধু একটি ঘরেই। অন্য ঘরে ফ্লোরিং করে থাকতেন আমজাদ হোসেন, চিত্রগ্রাহক বেবী ইসলাম এবং তার সহকারী বরুণ শঙ্কর।’’

ইমরুল শাহেদ এই প্রতিবেদককে জানান, তিনি থাকতেন সামনের বারান্দায়। কারণ অনেক রাত জেগে তিনি লিখতেন। যে কারণে গভীর রাত পর্যন্ত লাইট জ্বলত। অন্যের ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটাতেই এই ব্যবস্থা। 

রাতে তার হঠাৎ মনে হলো সোহেল চৌধুরী ও দিতি তাহলে কোথায় আছেন? কারণ ‘হীরামতি’র নায়ক-নায়িকা তারা। প্রশ্নটি আমজাদ হোসেনকে করতেই তিনি ইমরুল শাহেদকে বলেন, যেখানেই থাকুক কাল সকালে শুটিং স্পটে তোমার সঙ্গে দেখা হবে। এখন গিয়ে ঘুমাও। এ সময় বরুণ শঙ্কর চোখের ইশারায় পাশের ঘর দেখিয়ে দেন। 

ইমরুল শাহেদ এরপর দ্বিরুক্তি না করে সরাসরি সেই ঘরের দরজায় নক করতে শুরু করেন। ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন আমজাদ হোসেন বলেন, ‘থাক না, ওরা ঘুমাক।’ এই কথা থেকেই প্রবীণ চিত্রসাংবাদিক নিশ্চিত হয়ে যান ভেতরে সোহেল এবং দিতি আছেন। মুহূর্তেই তার সাংবাদিক মনে প্রশ্ন জাগে- তারা তো বিয়ে করেননি! তাহলে? এতো বিরাট খবর! 

ইমরুল শাহেদ আরো জোরে দরজায় নক করতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ পর সোহেল চৌধুরী দরজা খুলে দেন। তার চোখে-মুখে স্পষ্ট বিব্রতভাব। কিন্তু ইমরুল শাহেদ সেদিকে না তাকিয়ে সোজা ঢুকে যান রুমের ভেতর। দেখেন খাটে দিতি শুয়ে আছেন। তাকে দেখে দিতি উঠে বসেন। তারপর মুচকি হেসে বলেন, ‘আমি যখন শুনেছি ইউনিটে আপনি আসছেন, তখনই বুঝে গেছি আমরা ধরা পড়ে গেছি। আমি মিষ্টিও এনে রেখেছি। বুঝতেই পারছেন আমরা বিয়ে করেছি। সেই বিয়ের মিষ্টি খাওয়াবো আপনাকে।’ 

এরপরই মূলত সোহেল চৌধুরী-দিতির বিয়ের খবরটি প্রকাশ্যে আসে। যদিও তাদের সেই ভালোবাসার সংসার বেশিদিন টেকেনি। দুঃখজনক হলো দুজনই চলে গেছেন পরপারে। সোহেল চৌধুরী আততায়ীর হাতে প্রাণ হারান। দিতি মারা যান ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। 
 

রাহাত সাইফুল/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়