ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘বাংলাদেশের মানুষ আমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৩, ১৩ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৫:৪৭, ১৩ জুলাই ২০২১
‘বাংলাদেশের মানুষ আমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন’

২০০৪ সালে ‘ব‌্যাচেলর’ সিনেমার মাধ‌্যমে বড় পর্দার পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর। এরপর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’, ‘শনিবার বিকেল’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে মুক্তি পেয়েছে তার প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম‌্যান’।

মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ক‌্যারিয়ারের শুরুর দিকটা মোটেও সুখকর ছিল না। ভারতীয় সংবাদমাধ‌্যম আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন—‘প্রথম দিকে সিনেমা তৈরির কাজে হাত দেওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষ আমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। তারা বলেছিলেন, আমি সব ভেঙেচুরে নষ্ট করে দিচ্ছি। ওই সময় তারেক মাসুদ একমাত্র মানুষ যিনি বুদ্ধিজীবীদের ‘ডার্লিং’ হয়েও বাংলাদেশের এক পত্রিকায় আমাকে না জানিয়ে বিশদে লিখেছিলেন। তিনি দেখিয়েছিলেন—বুদ্ধিজীবীরা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা বিশ্ব চলচ্চিত্রের নিরিখে কতটা ভুল! সে দিন তিনি আমার পাশে ছিলেন।’

বাঙালি নতুন কিছু দেখলেই শিউরে ওঠেন। বিষয়টি স্মরণ করে এই নির্মাতা বলেন, ‘বাঙালি মাত্রই রক্ষণশীল। তারা যে অঞ্চলের বাঙালিই হোক। নতুন কিছু দেখলেই শিউরে ওঠে। আসলে কেবল বাঙালি নয়, পূর্ব জার্মানিতে থাকে আমার এক বন্ধু, সে বলেছিল ওর আব্বা ‘বার্বি ডল’ দেখেও ভয় পেয়েছিল। বলেছিল, ‘পশ্চিম থেকে এই সব এসে সমস্ত কিছু শেষ করে দেবে।’ নতুন কিছুকে এক কথায় আমরা মানতে পারি না। এটা আমাদের সকলের মধ্যেই আছে।’

মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী মনে করেন, তার সিনেমা মুক্তির পর দর্শক দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যান। কারণ ব‌্যাখ‌্যা করে এই নির্মাতা বলেন, ‘প্রায় প্রত্যেক সিনেমায় আমি নিজেকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে দিই। ফলে প্রত্যেকটা সিনেমা দর্শকের কাছে একটা আলাদা জার্নি হয়ে দাঁড়ায়। একদল মানুষ আমাকে পুরোনো থার্মোমিটারে মাপতে চান, তারা এর বিপক্ষে বলতে শুরু করেন। আরেক দল, সব সময়ই নতুন রাস্তার যাত্রী হতে চান, তারা পক্ষে বলতে শুরু করেন।’

বুদ্ধিজীবীরাও ফারুকীকে উপেক্ষা করেছিলেন বলে মন্তব‌্য করেছেন এই পরিচালক। সেই ঘটনা উল্লেখ করে ফারুকী বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা আমায় উপেক্ষা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, কী সব বিষয় নিয়ে কাজ করি, জঘন্য! তাতেও আমি কাজ বন্ধ করছি না দেখে আমাকে গালিগালাজ করেছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল—আমি বাংলা ভাষাকে শেষ করে দিচ্ছি। যদিও এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা প্রাত্যহিক জীবনে যে ভাষা ব্যবহার করি, তখন তা বড় পর্দায় কম ব্যবহৃত হতে দেখেছি। আমার সিনেমায় ওই ভাষাই ব্যবহার করেছিলাম। এতে তাদের ঝটকা লাগে। সিনেমায় যে চরিত্র যে ভাষা বলে, তাকে তো সেই ভাষাই বলাতে হবে। আমি কুলির গায়ে তো শার্ট-প্যান্ট পরাতে পারব না।’

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়