ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে মিটিং, প্রশ্নবাণে বিদ্ধ নিপুণ

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ২৭ মার্চ ২০২২   আপডেট: ১৫:৩০, ২৭ মার্চ ২০২২
সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে মিটিং, প্রশ্নবাণে বিদ্ধ নিপুণ

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক যেন থামছেই না। সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে এখনও চলছে আইনি লড়াই। জায়েদ খান নাকি নিপুণ কে, বসতে যাচ্ছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে? এ প্রশ্ন এখন অমীমাংসিত।

এরই মধ্যে বার বার শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসছেন নিপুণ আক্তার। এ নিয়ে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ এই নায়িকা। বিষয়টি নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন জায়েদ খান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার আদেশ কঠোরভাবে পালন করতে জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তারকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১৪ মার্চ নিপুণের বিরুদ্ধে আনা আদালত অবমাননার অভিযোগ শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে গত ৬ মার্চ আদেশ দেন আদালত। জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত ও পদটির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণ আক্তারের আপিল আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপরই জায়েদ খান ও তার আইনজীবীরা দাবি করেন, যেহেতু পদটির ওপর স্থিতাবস্থা জারি অর্থাৎ যারা যে অবস্থায় ছিলেন তারা সেভাবেই কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। অর্থাৎ জায়েদ খানই সাধারণ সম্পাদক!

এর বিরুদ্ধেও বক্তব্য আসে নিপুণ ও তার আইনজীবীদের পক্ষ থেকে। তারা জানান, স্থিতাবস্থা মানে কেউ এই পদটিতে বসতে পারবেন না। তবে এর কয়েকদিন পর থেকেই নিপুণ সাধারণ সম্পাদকের কার্যক্রম মৌখিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকি ৭ মার্চ ও ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়াসহ সমিতিতে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ার ব্যবহার করেন তিনি। সর্বশেষ ২৬ মার্চ কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিং করেন, যেখানে সাধারণ সম্পদকের চেয়ারে বসেই মিটিং সম্পন্ন করেন। এই মিটিংয়ে অভিনেত্রী রোজিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণসহ রিয়াজকে কমিটিতে নেওয়ার পক্ষে মত দেন এই অভিনেত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বর্তমান কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। তিনি জানান, নিপুণই তাদের সাধারণ সম্পাদক। মিটিংয়েও অংশ নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

সাইমন সাদিক বলেন, ‘গতকালের মিটিংয়ে নিপুণ আপাসহ কমিটির ১২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলাম।’ নিপুণের বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘কমিটির মিটিংয়ের কার্যক্রমে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণ আপা ছিলেন। এ বিষয়ে আইনগত কোনও জটিলতা নেই। কারণ এর আগে সাধারণ সম্পাদকের আসন ব্যবহার করায় আদালত অবমাননার মামলা করেছিলেন জায়েদ খান। তবে আদালত সেটা খারিজ করে দিয়েছিলেন।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন দৈনিক যুগান্তরের বিনোদন প্রধান এফ আই দীপু। তিনি মিটিংয়ের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেন, ‘ছবিটি আজকের। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির মিটিং বলে জেনেছি। জিজ্ঞাসা—১. অমীমাংসিত সাধারণ সম্পাদকের পদবী বা চেয়ার কী আদালত উন্মুক্ত করে দিয়েছেন? ২. আদালতের রায় হয়ে গেছে? নাকি আদালত অবমাননা চলছে ধুমছে?’ এই স্ট্যাটাসে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। মন্তব্যের ঘরে নিপুণের চেয়ারে বসা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

আইন অমান্য করে মিটিং করার ব্যাপারে জানতে চাইলে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘দেখুন বিষয়টি আমি নিজেও পরিষ্কার না। নিপুণের আইনজীবী বলছেন তার পক্ষে কথা, জায়েদের আইনজীবী বলছেন তার পক্ষে কথা। আমি বা আমরা কী করবো? আমাদের তো মিটিং করতে হবে তাই না!’

আরও জানা গেছে, সমিতির কার্যকরী পরিষদের মিটিংয়ের বিষয়ে জানানো হয়নি সহ-সভাপতি ডিপজল ও নায়ক রুবেলকে। এ অভিযোগের বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমি এসবের কিছু জানি না। বিষয়টি দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জানেন। আমি তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি সবাইকে জানাতে। তারা জানিয়েছে কিনা তা তাদের জিজ্ঞাসা করুন।’

ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়