বিক্ষুব্ধ শিল্পীরা চাইলেন সংস্কার, দিলেন আল্টিমেটাম
জ্যেষ্ঠ বিনোদন প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
বৈষম্য দূরীকরণে এবার সংস্কার চেয়ে আল্টিমেটাম দিলেন টেলিভিশন শিল্পীরা। অভিনয় শিল্পী সংঘের বর্তমান কমিটির শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দেওয়া এবং আলোচিত ‘আলো আসবেই’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সক্রিয় থাকায় শিল্পীসমাজ আজ প্রশ্নবিদ্ধ। এসব ঘটনার দায় নিতে নারাজ সাধারণ শিল্পীরা।
বিষয়টি নিয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের বর্তমান কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসানকে আলোচনায় বসার তাগিদ দিলেও মেলেনি সাড়া। উল্টো ‘অ-সদস্য’ বলে বৈষম্য তৈরির অভিযোগ করেছেন শিল্পীরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান কমিটির সংস্কার চেয়ে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সংঘের সদস্য এবং যারা সদস্য নন সবাই বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বর্তমান কমিটি বিগত দিনের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করবে এমন দাবি তোলা হয়। এ জন্য তিনদিনের সময় বেঁধে দিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিল্পীরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— ইফতেখার দিনার, আজমেরী হক বাঁধন, এফ এস নাঈম, নাদিয়া আহমেদ, নাজিয়া হক অর্ষা, শ্যামল মাওলা, সুষমা সরকার, কাজী নওশাবা আহমেদ, মৌসুমী হামিদ, খায়রুল বাসার, শরিফ সিরাজ, মনোজ প্রামাণিক, সোহেল মন্ডল, আরেফিন জিলানী সাকিব, সিয়াম নাসির, ইমরান হাসো প্রমুখ।
উপস্থিত বিক্ষুব্ধ শিল্পীদের অভিযোগ, গুটিকয়েক শিল্পী এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতাদের কারণে পুরো শিল্পী সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এর দায় সব শিল্পীরা নেবে না। এ জন্য বর্তমান কমিটির ক্ষমা চাইতে হবে। দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠকের পর তারা চারটি দাবি করেন।
এ সময় অভিনেতা সোহেল মন্ডল বলেন, ‘আমরা কথা বলতে চাই। কীভাবে শিল্পীদের চলমান ক্রান্তিকাল কাটিয়ে নতুন রূপরেখা দেওয়া যায় তা নিয়ে ভাবছি। সার্বিক পরিস্থিতি থেকে কথা বলতে চাই। নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাতে চাই। সদস্য এবং অ-সদস্য এই বৈষম্য আর রাখতে চাই না। সকল শিল্পী এক। আমাদের এই দাবির সঙ্গে সংঘের সদস্যরাও সাড়া দিয়েছেন।’
মনোজ প্রামাণিক বলেন, ‘শিল্পীদের এক হওয়ার কারণ একটাই, দেশে এই সময়টা যা যা ঘটে যাচ্ছে তার জন্য আমরা অনেক বেশি ব্যথীত। কিছু শিল্পীর আচারণ এবং তাদের কথাবার্তা অমানবিক। এরই মধ্যে তারা অনেক অমানবিক কাজ করেছেন। যা শিল্পী সমাজের জন্য লজ্জার। সেই দায় সকল শিল্পীকে নিতে হচ্ছে। অপরাধ না করেও এই দায় আমরা কেন নেব? আমরা সংস্কার চাই। পর্যাপ্ত গবেষণা ও পরিকল্পনা নিয়ে আমরা নেমেছি। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের আলোচনায় বসার জন্য সময় দিয়েছি। আমরা শিল্পীস্বরূপ আচরণ চাই। তাদের সাড়া না পেলে আমরা বিকল্প পথে হাঁটবো।’
এ প্রসঙ্গে শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে আমরা অবগত না। আমরা সদস্যদের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত। আমরাও বৈষম্য চাই না। ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকতেই পারে, সেই দায় সংগঠনের না। সংগঠন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
দুই বছর মেয়াদি এই সংগঠনের নির্বাচন হয়েছে ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি। ১১ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির পথচলা শুরু হয়। অনেক আগেই কমিটির দুই বছর শেষ হয়েছে। পেরিয়ে গেছে আরও ছয় মাসেরও বেশি সময়। তবে নেই নতুন নির্বাচনের তাগিদ।
এরই মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে সংগঠনটির বর্তমান কমিটি তোপের মুখে পড়ে। সভাপতির ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে সক্রিয় থাকা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে একজোট হয়েছেন সাধারণ শিল্পীরা। বৈষম্য দূর করে চাইছেন সংস্কার। তবে নাসিমের দাবি, অভিনয় শিল্পী সংঘ তিন বছর মেয়াদি সংগঠন।
রাহাত//