ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মৌ চাষ করে মোক্তার এখন লাখপতি 

হিমেল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১১:১০, ২৯ আগস্ট ২০২০
মৌ চাষ করে মোক্তার এখন লাখপতি 

অক্লান্ত পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে মানুষ অসম্ভবকেও সম্ভবে পরিণত করতে পারে। সেজন্য অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়ার ইতি টেনেও ১০ বছর প্রবাস জীবন থেকে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে মৌমাছির চাষ করে সফল মোক্তার হোসেন। 

তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামে। কৃত্রিমভাবে মৌমাছির চাষ প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুনভাবে জীবন-জীবিকা শুরু করেন তিনি। 

মোক্তার হোসেন মধু আহরণের জন্য ‘বেসিক’ নামের এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রথমে ট্রেনিং নেন। মাত্র ৩ লক্ষ টাকার মূলধন নিয়ে এপিস সেরেনা ইন্ডিকা মৌমাছির চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার ১৫০টি মৌবাক্স রয়েছে। প্রতি মৌবাক্স থেকে বছরে ১০ থেকে ১২ কেজি মধু সংগ্রহ করেন। তাতে করে ১৫০টি মৌবাক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ কেজি থেকে ১৭০ কেজি মধু সংগ্রহ করেন তিনি। মধু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি স্বাবলম্বী হয়েছেন এই ৩৫ বছরের যুবক মোক্তার হোসেন। 

তিনি শুধু তার গ্রামেই মধু চাষ করেন না, বছরের বিভিন্ন সময়ে রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন মৌসুমে সরিষাসহ বিভিন্ন ফুল থেকে মৌবাক্সের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করেন। বর্তমানে মোক্তার হোসেন কুমারখালী সদকী ইউনিয়নের মট মালিয়াট গ্রামের বিভিন্ন মাঠের শ শ-বিঘা জমিতে জন্ম নেওয়া কচুরিপানা ও বিলে ফোটা শাপলা ফুল থেকে মধুসংগ্রহ করছেন। 

তিনি বলেন, আমি গাইবান্ধার একটি ফার্ম থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রথমে শুরু করি ভ্রাম্যমাণ মধু আহরণ। সেখান থেকে বছরে পাঁচ থেকে সাত মাস মধু আহরণ করে আট থেকে দশ লক্ষ টাকা আয় করি। বর্তমানে আমি বছরে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মধু বিক্রি করি। মৌমাছির খাবার ও অন্যান্য খরচ বাদে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আয় হয়।

কুমারখালি উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, আমরা নিজেরাই দিন দিন মৌমাছির বসবাসের স্থান ও প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট করে ফেলছি। বিশেষ করে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বিশ্বে মৌমাছির সংখ্যা দ্রুত কমছে। ফলে হুমকির মুখে পরতে যাচ্ছে আগামী দিনের কৃষি উৎপাদন। মৌচাষে বেশি বেশি প্রান্তিক চাষি ও বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, উপজেলায় চার হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়। এ বছর ৩ হাজার হেক্টর জমিতে এখনো পানি থাকায় শাপলা ও কচুরিপানার ফুল ফুটেছে। সেখান থেকে মোক্তার নামের এক যুবকের মধু সংগ্রহ করার কথা শোনা গেছে।

 

লেখক: শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

বেরোবি/মাহি              
 

রাইজিংবিডি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়