ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনা তাদের উদ্যোক্তা বানিয়েছে 

এস এ এইচ ওয়ালিউল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৯:০৩, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
করোনা তাদের উদ্যোক্তা বানিয়েছে 

করোনাকালে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতেই সামাজিক উদ্যোগের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। বিশেষ করে তরুণরা এ সময় এগিয়ে এসেছে নানামুখী সৃজনশীল কর্ম নিয়ে। তেমনি উদ্যমী তিন তরুণ রিয়াদ, সিজার ও সাইফ। 

রিয়াদ পড়াশুনা করছেন আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে, সিজার পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে আর সাইফ ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে। 

করোনাকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদ মাগুরাতে হোম ডেলিভারি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাণিজ্যিকভাবে ‘অর্পণ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। 

গত মার্চে বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর এর সংক্রমণ রোধে দীর্ঘ লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। উদ্ভূত এই পরিস্থিতে ওষুধের দোকান ছাড়া বন্ধ ছিল দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। করোনা সংক্রমণের ভয়ে যখন মানুষের বাড়িতে কোনো সাহায্যকারীও যাচ্ছিল না, সেসময় সকালে নাস্তার রুটি কিংবা পরোটা এবং বিকালে নাস্তার নানা আইটেম, কাপড়, বই, ওষুধ, সবজি, ফলমূল, সংবাদপত্রসহ গৃহস্থালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ভোক্তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ শুরু করেন তারা।

চাহিদা অনুযায়ী ভোক্তা অর্ডার দিচ্ছেন ফেসবুকে কিংবা ফোনে, আর পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে অর্ডারকারীর গন্তব্যে। সামান্য কিছু চার্জের বিনিময়ে ভোক্তা ঘরে বসেই বুঝে নিচ্ছেন অর্ডার করা পণ্য এবং পণ্য হাতে পেয়ে তবেই পরিশোধ করছেন মূল্য। এতে করে একদিকে যেমন ক্রেতার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমছে, বেঁচে যাচ্ছে সময় এবং পাশাপাশি কমছে কষ্ট। 

অপরদিকে উদ্যোক্তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেদের জন্য যেমন স্বাধীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে পেরেছেন, তেমনি অসংখ্য তরুণের জন্যেও তৈরি হয়েছে নিরাপদ উপার্জন ক্ষেত্র, এমটাই মনে করেন অর্পণের তিন প্রতিষ্ঠাতা।

উদ্যোক্তারা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে হোম ডেলিভারি সেবার মতো কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। ভোক্তার চাহিদা পূরণে ডেলিভারি কর্মী নিয়োগ করোনাকালীন সময়ে কর্মহারা মানুষের উপার্জনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা সূচিত করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

উদ্যমী তিন তরুণ মনে করেন, করোনা পরবর্তী সময়ে পেশায় বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে। সেই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে পেশা জীবনে কোন ঝুঁকিতে পড়তে হবে না। ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে নির্দিষ্ট কোনো পেশায় আটকে না রেখে অনিশ্চয়তাকে বাস্তবতা ভেবে, সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। আর এই ব্যাপারটাই আমরা অনুধাবন করে বাস্তবিক অর্থে প্রয়োগ শুরু করেছি, যেন উদ্দ্যেশ্য হীনতায় আমাদের মাঝে হতাশা তৈরি না হয়। 

করোনা পরবর্তী সময়েও মানুষের কাছে অর্পণের আবেদন সমানভাবে থাকবে। কারণ, মানুষের জীবনব্যবস্থা প্রতিনিয়ত উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। সেই চেষ্টায় মানুষের কাজের চাপ কমাতে এবং প্রয়োজনের সময় সেবাগ্রহীতাকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে অর্পণের এই হোম ডেলিভারি সার্ভিসটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, বলেন তারা। 

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

ইবি/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়