ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তেজস্বী হবে সব ধরনের পণ‌্যের প্ল‌্যাটফর্ম: এনিকা 

মিফতাউল জান্নাতি সিনথিয়া  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ২১ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৪:৫৪, ২১ নভেম্বর ২০২০
তেজস্বী হবে সব ধরনের পণ‌্যের প্ল‌্যাটফর্ম: এনিকা 

উম্মে সাহেরা এনিকা। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকার জুরাইনে। তিন বোনের মধ্যে প্রথম। বর্তমানে বসবাস পুরান ঢাকার নারিন্দায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছেন ইডেন মহিলা কলেজ থেকে। স্বামী ও দুই ছেলে নিয়েই তার সংসার।

পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন এনিকা। প্রায় ৬ বছরের শিক্ষকতা পেশাকে ছুটি দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেন তিনি। টাই-ডাই বাটিক ও ব্লকের শাড়ি, থ্রি-পিস, শাল, ব্যাগ, ছেলেদের পোশাক ও মেয়েদের সেন্ডেলই তার পেজের উল্লেখযোগ্য পণ্য।

বাটিকের উৎপত্তি আমাদের দেশে না হলেও মনে করা হয় এই শিল্পটি আমাদের দেশের ঐতিহ্য। কিন্তু সঠিক প্রচার ও প্রচারণার অভাবে জনপ্রিয়তা হারাতে বসেছে। অথচ কাঁচা মালের সহজলভ্যতা, সহজ সোর্সিংয়ের সুযোগের কারণে এর সম্ভবনা অনেক বেশি। দেশের বাটিক শিল্পকে আরও বেশি প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় করাই তার মূল লক্ষ্য। এতে অনেক মানুষের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। আর এই ভাবনা থেকেই বাটিক ব্লক নিয়ে কাজ শুরু করেন এই সংগ্রামী নারী।

এনিকা বলেন,  ‘‘১৫ মাস আগে ২৬ আগস্ট ২০১৯ সালে মাত্র ১৫০০ টাকা নিয়ে তেজস্বীর যাত্রা শুরু। শিক্ষকতার পাশাপাশি চালিয়ে নিচ্ছিলাম ব্যবসাকে। হতাশা থাকলেও ভেঙে পড়িনি বরং নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করার সাহস পেয়েছি। আমার উদ্যোক্তা জীবনে বেশি বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি বাটিকের সেন্ডেল তৈরিতে। যেহেতু পরিধেয় পাতলা কাপড় দিয়ে তৈরি করা ও একদমই নতুন পণ্য, তাই কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাটিকের সেন্ডেল ব্যতিক্রমী একটি পণ্য। ক্রেতারা অনেক খুশি বাটিকের সেন্ডেল নিয়ে। তারা জানিয়েছে, এটি অনেক আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল।

আমার স্বামী হলেন আমার ছায়াসঙ্গী। তিনি আমার প্রতিটি কাজে সহায়তা করেছেন বলেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারছি। উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) ও গ্রুপের মাধ্যমে শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারকে পেয়েছি। স্যারের সান্নিধ্য না পেলে নিজেকে নতুন করে চেনার সুযোগ হতো না। তার কাছেই শেখার সুযোগ পেয়েছি আর তা ব্যক্তিজীবন ও পেশাগত জীবনে প্রয়োগ করতে পারছি। স্যারের কাছ থেকেই শেখার সুযোগ পেয়েছি বলেই ব্যবসার শুরুতে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়নি। স্যার হলেন আমার জীবনের স্বপ্নদ্রষ্ঠা। আমি স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ।’’

বেকারত্ব নিরসনে পরামর্শ দিতে গিয়ে এনিকা বলেন, “তরুণ প্রজন্ম যদি দেশীয় পণ্য নিয়ে জেনে ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেন, তবে নিজেরসহ আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে পারবেন। বেকারত্ব নিরসনে পড়াশোনা করতে হবে। নিজ নিজ পণ্য নিয়ে যত বেশি জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারবেন, তত বেশি এই প্রতিযোগিতার সময়ে টিকে থাকা সহজ হবে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল স্কিল ফর বাংলাদেশ (ডিএসবি) গ্রুপটি অনেক সহায়তা করতে পারবে। আমি নিজেও এখানে সময় দিয়ে আমার বেসিক স্কিল বৃদ্ধি করতে পারছি।’’

১৫০০ টাকার ব্যবসায় বর্তমানে এনিকার মূলধন দাঁড়িয়েছে ২ লাখ টাকায়। উই থেকে পেয়েছেন ইনোভেশনে জয়ী অ্যাওয়ার্ড। ভবিষ্যতে বাটিকের সেন্ডেলের মতো নতুন পণ্যটিকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করতে চান তিনি। স্বপ্ন দেখেন তেজস্বী হবে এমন একটি অনলাইন স্টোর, যেখানে ক্রেতারা টাই-ডাই ও বাটিকের সব ধরনের পণ্য পাবেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়