ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সৌখিনপণ্য মনিপুরী শাল      

সাইদুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০  
সৌখিনপণ্য মনিপুরী শাল      

যারা নিয়মিত পরিবারের পোশাকাদি কেনাকাটা করেন, তারা মার্কেটে গিয়ে দেখেন মনিপুরী তাঁতের মূল্য কত! দেশের সৌখিন মানুষের কাছে ব্যবহার্য এ পণ্যটি পছন্দের প্রথম তালিকায়। তবে, প্রচারের অভাবে অনেকের কাছেই মনিপুরী তাঁত অপরিচিত ছিল। ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে ঝিমিয়ে পড়া মনিপুরীদের তাঁতের পণ্যগুলো আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

সিলেটের শ্রীমঙ্গলসহ জেলা শহরের বেশ কিছু গ্ৰামাঞ্চলে মনিপুরী উপজাতিরা তাঁত পণ্য তৈরি করে থাকেন। এ পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-শাড়ি, থ্রি-পিছ, শাল, মাফলার, গামছা, নকশিকাঁথা ইত্যাদি।

এ সম্প্রদায়ের পুরুষরা সাধারণত বাইরে কাজ করে থাকেন। তাই তাঁতে কাপড় বোনার কাজগুলো মহিলারাই বেশি করেন। শুরুর দিকে তারা নিজেদের ব্যবহারের জন্যই কাপড় বুনতেন। এক পর্যায়ে অন্য সাধারণ মানুষের কাছে মনিপুরীদের তাঁতে তৈরি পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি হয়।

এরপর থেকেই মনিপুরীরা কাপড় বোনার কাজটিকে পেশা হিসেবেই গ্ৰহণ করেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মনিপুরী পণ্যগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।

এ বছর করোনাকালীন সময়ে মানুষের জীবনে নেমে আসে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়। এর প্রভাব পড়ে বেশির ভাগ মানুষের উপরেই। অর্থনৈতিকভাবে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন মনিপুরী তাঁতিরা।

ইন্টারনেটের ব্যবহারের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের প্রচার আরও সহজ হয়েছে। আর দেশীয় পণ্যের প্রচারের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে স্বনামধন্য ফেসবুক গ্রুপ উই (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স) ফোরাম। দেশীয় পণ্যের প্রসারে ই-ক্যাব (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ)-এর সাবেক সভাপতি ও উই’র উপদেষ্টা রাজিব আহমেদের অবদান অনস্বীকার্য।

মনিপুরী উপজাতিদের তাঁতে বোনা কাপড় ও শালকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে অনেকেই কাজ করেন বা করছেন।

ফেসবুক পেজ ‘তিয়ামো’র স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ, যিনি মনিপুরী শাল ও পোশাক নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা করছেন। নাসিরের বিশ্বাস মনিপুরী পণ্য পূর্বের সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। সিলেটের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের ৬৪টি জেলার গ্ৰাম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। তিনি স্বপ্ন দেখেন একদিন বিদেশেও রপ্তানি হবে দেশের মনিপুরী পণ্য।  

ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় ৩০টি জেলায় পৌঁছে গেছে নাসিরের পণ্য। গত একমাসেই প্রায় ১৫০টি শাল বা চাদর বিক্রি করেন তিনি। যার বিক্রয় মূল্য এক লাখ টাকার অধিক। বেশির ভাগ ক্রেতাই ছিল উই’র।

এভাবেই দেশীয় পণ্যের প্রচার ও ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে ব্যাপক।

ঢাকা/সিনথিয়া/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়