ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেশ-বিদেশে প্রশংসিত রিনির পণ্য

সাজেদুর আবেদীন শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২২ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১২:০৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২১
দেশ-বিদেশে প্রশংসিত রিনির পণ্য

মাহমুদা আক্তার রিনি, জন্ম ও বেড়ে ওঠা মুন্সীগঞ্জে। তারা চার ভাই-দুবোন। বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মা গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। অনার্স-মাস্টার্সে ভালো রেজাল্ট করেন। স্বামী ও দুই ছেলে নিয়েই তার পরিবার।

মাহমুদা রিনি জানান, অনেক আগে থেকেই কিছু একটা করার তাগিদ ছিল তার। তাইতো স্কুল জীবন থেকেই যে কোনো সরকারি-বেসরকারি ডাটা এন্ট্রির কাজ, রোটারি, টিউশন সবকিছুতে খুব ভালোভাবে সংযুক্ত ছিলেন। মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার আগেই ঢুকে যান করপোরেট বাজারে। ভূঁইয়া কম্পিউটারে ১ বছর জব করেন। তারপর ড্যাফোডিল গ্ৰুপে দীর্ঘ ১২ বছর জব করেন।

পারিবারিক ব্যস্ততা ও নিজেই কিছু করার আগ্ৰহ থেকেই গত বছর জব ছেড়ে দেন। এর মধ্যে চলে আসলো করোনা। সারাদিন ঘরে বসে কোন কিছু শুরু করতে পারছিলেন না। এর মধ্যেই ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্স গ্রুপ 'উই'র সন্ধান দেন একজন ছাত্রী নাবিলা ও ছোট বোন রুমি। স্বপ্নের বীজটি সেদিন বপন করে ফেলেন তিনি।

বেশ কিছুদিন 'উই' এবং 'ডিজিটাল স্কিলস বাংলাদেশ গ্রুপে পোস্ট পড়ে সিদ্ধান্ত নেন হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করবেন। শ্বশুরবাড়ি জামালপুরে তাই আগ্ৰহটা আরো বেশি বেড়ে গেলো। কারণ জামালপুরের হস্তশিল্প দেশব্যাপী খ্যাত। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে জামালপুরে হাতের কাজের অনেক কিছু কেনাকাটা করতেন নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ও অফিস কলিগদের জন্য। সেদিন থেকেই মনের কোনে ছোট্ট একটা ইচ্ছা করেন এই শিল্পকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় । এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

উইতে কিছু দিন পারসোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের পর পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। খুলে ফেলেন নিজের পেজ RR Shop. তারপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। পরিবার বন্ধু-স্বজন সবার এত সাপোর্ট তার কারণে অল্প দিনের মধ্যেই বেশ সাড়া পান তিনি।

তিনি বলেন, 'আজকে পর্যন্ত RR Shop-এর পণ্য বাংলাদেশের ১৮টি জেলায় ডেলিভারি করেছি। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকায় পণ্য ডেলিভারি দিয়েছি। বাংলাদেশের লোক মারফত ডেলিভারিগুলো দিয়েছি। একটি ঔষধ কোম্পানিতে করপোরেট সেলও করেছি। সব কৃতিত্ব উইর। যেহেতু উইর পথ ধরে আজকের আমি।'

এর মধ্যেই রিনি যুব উন্নয়ন নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ‘ডিজাইন এবং কাটিংয়ের উপর তিন মাসের একটি কোর্স করেন। কোনো কিছু করার অদম্য ইচ্ছা সবসময় রিনির মধ্যে ছিল। দীর্ঘ চাকরি জীবনের জন্য তার রয়েছে খুব ভালো পরিচয়। যা তার উদ্যোক্তা জীবনে আরো কাজে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি গত বছরের ৯ আগস্ট ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদশ এবং উই গ্রুপে জয়েন করি। সেখানে বেসিক স্কিলের ওপর নিয়মিত পড়াশোনা করছি। এ পর্যন্ত আমার পণ্য প্রায় ৩ লাখ টাকার উপরে বিক্রি হয়।'

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে রিনি বলেন, ‘দেশের ই-কমার্সে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই। জামালপুরের হস্তশিল্প দেশেসহ বিদেশেও ছড়িয়ে দিতে চাই। আমি চাই, আমার কাজের মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হোক।’

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ।

ঢাকা/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়