ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সাথে কপালও পুড়ছে’

জুয়েল মামুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ২ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৮:৩১, ২ মার্চ ২০২১
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সাথে কপালও পুড়ছে’

করোনায় বিপাকে পড়েছেন টাঙ্গাইলের কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বিশেষ করে যারা স্কুল-কলেজ কেন্দ্রিক ব্যবসা করেন, এগুলো বন্ধ থাকায় তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। 

অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন আবার অনেকে শেষ পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে আছেন তাদের কর্মস্থলে। করোনার শুরুতে লকডাউনের সময়ে প্রায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। চাকরিজীবী অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন আবার অনেকে পেশা বদল করেছেন। 

রাস্তাঘাট, কল-কারখানা চালু হওয়াতে ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছে, তবে স্বাভাবিক হতে পারেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যাদের ব্যবসা। এদের মধ্যে আছেন বইয়ের দোকান মালিক, স্টেশনারি দোকান, ছোটখাটো সাইবার ক্যাফে, ক্রেস্টের দোকান, শিক্ষার্থীদের ড্রেস তৈরি করে এমন দর্জির দোকান ও স্কুল কলেজের পাশের হোটেল ব্যবসায়ীরা। 

ঘাটাইল সরকারি জিবিজি কলেজ মোড়ে মোজাম্মেল হকের কম্পিউটারের দোকান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি তার ডেক্সটপে বসে সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজ করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাম-কাইজ নাই, কী করবো ভাই?’ 

ব্যবসায়িক খোঁজখবর নেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা বলতে  আমাদের কোনো কিছু নেই, এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। করোনা মহামারির কারণে আমাদের ব্যবসা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আমাদের ব্যবসাটা আসলে শিক্ষাকেন্দ্রিক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমরা প্রায় বেকার হয়ে পড়েছি। আমাদের যে টাকা আয় হয় আমাদের ব্যয় তার থেকে বেশি। আমরা ব্যবসাটা ছাড়তেও পারছি না আবার দোকান ভাড়াও পরিশোধ করতে পারছি না। রাস্তায় গিয়ে রিকশাও চালাতে পারছি না আবার কোনো ব্যাংকও আমাদের লোন দেবে না। সত্যি বলতে আমরা জীবনের সবচেয়ে সংকটময় সময় পার করছি।’

ক্রেস্ট ব্যবসায়ী তাহের আলী বলেন, ‘ভাই এখন তো আর কোথাও অনুষ্ঠান হয় না। তাই কেউ আর ক্রেস্ট বানাতে আসে না। দোকান ভাড়া দিতে পারছি, করোনার পর থেকে কোন দিন বাসায় ভালো বাজার করে নিয়ে যেতে পারি না। এখন ব্যবসা ছেঁড়ে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।’

বইয়ের দোকানি মো. ফজলুল হক বলেন, ‘সকালবেলায় এসে দোকান খুলি। কোনো দিন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি হয় আবার কোনো দিন এক টাকাও বিক্রি হয় না। বাসা ভাড়া দিতে পারছি না, দোকান ভাড়া দিতে পারছি না। না খাইলে তো আর চলে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সাথে কপালও পুড়ছে।’

টাঙ্গাইল/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়