ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটে ই-কমার্স খাতে চাহিদা

প্রকাশিত: ২১:৫২, ৩১ মে ২০২১  
২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটে ই-কমার্স খাতে চাহিদা

প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে দেশের ই-কমার্স সেক্টর। এর ফলে বিশাল সংখ্যার পণ্য দেশে আমদানি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাইরের দেশগুলিতেও চলছে দেশীয় পণ্যের রপ্তানির কাজ। করোনার জন্য ২০২০ সালে অনলাইনে নিত্যপণ্যের বেচাকেনা ৩০০ শতাংশ বেড়েছে।

সেই হিসেবে ই- কমার্স খাতে ব্যবসা বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। যেখানে কোভিডের আগেও এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ২০-২৫ শতাংশ। গতবছর অনলাইনে বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায়, ই-কমার্স খাতে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার কারণে অনলাইনে  লেনদেনও বেড়েছে। সবকিছুর পরেও দেশের ই-কমার্স খাতে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এমন সেক্টরের উন্নতিতে, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটে কোন কোন দিকগুলির প্রতি নজর রাখতে হবে? সে বিষয়ে কথা বলেছেন ই-ক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে) গুরুত্বপূর্ণ  ব্যাক্তিত্বরা।

সাহাব উদ্দীন শিপন ( ভাইস প্রেসিডেন্ট, ই-ক্যাব)

আসন্ন বাজেটে আমাদের প্রথম চাওয়া ই-কমার্সের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ভ্যাট আওতামুক্ত রাখতে হবে। তাদের থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক লেনদেনে ভ্যাট রাখা যাবে না। এটা আমাদের প্রধান চাওয়া।

দ্বিতিয়ত, বড় কোম্পানি গুলিও এখন ই-কমার্সে ব্যবসা করছে। তাদের কর্পোরেট ট্যাক্স যাতে ১ শতাংশের ভিতরে নিয়ে আসা হয়। তাহলে মানুষ ধীরে ধীরে ই-কমার্সের দিকে চলে আসবে।

তৃতীয়ত, দেশে যে পরিমান অনলাইন ট্রান্সেকসন হবে সেগুলির ভ্যাট এবং ট্যাক্স আওতামুক্ত রাখা। তাহলে মানুষ বেশি পরিমান অনলাইনে লেনদেন করতে উৎসাহ পাবে এবং বিভিন্ন কোম্পানিগুলো অনলাইন ট্রান্সেকসন করবে। এক্ষেত্রে তারা ভিসা বা মাষ্টার কার্ডের মাধ্যমে যে পেমেন্ট কালেকশন করে।  তাদেরকে সেখানে প্রায় সারে ৩ শতাংশ পর্যন্ত  ট্রান্সেকশনাল ফি প্রদান করতে হয়। যদি এটাকে নূন্যতম প্রায় .১ শতাংশ বাস্তবায়ন করে তাহলে কোম্পানিগুলির দ্রুত বিকাশ হবে।

এছাড়াও অনেকে উদ্যোক্তারাই ই-লার্নিং বা ই-বুক নিয়ে কাজ করছে। তাদের ক্ষেত্রেও উপরের বিষয়গুলির প্রতি  নজর দিতে হবে। আসন্ন বাজেটে যদি এমন কোনও প্রস্তাব কার্যকরী হয়,তাহলে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে।       

নাসিমা আক্তার নিশা ( জয়েন্ট সেক্রেটারি, ই- ক্যাব এবং প্রেসিডেন্ট উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম )

২০২১-২০২২ অর্থ বছরে উদ্যোক্তা এবং ই-কমার্স খাতে অবশ্যয় আমার ব্যক্তিগত কিছু উপস্থাপনা রয়েছে। ছোট করে যদি দেশি পণ্য ও ই-কমার্সের কথা বলি, তাহলে প্রথমে বলব এবারের বাজেটে এই সেক্টরকে সরকারীভাবে ট্রেডলাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে।

এছারাও আমাদের দেশের তাঁতিরা যে তাঁত পণ্য বিক্রি করছে, তাদের কাঁচামাল যেমনঃ সুতা, টানা এবং অন্যান্য জিনিসগুলির মূল অনেক বেশি ধরা হয়েছে গতবছরের বাজেটে। এরফলে তাঁত পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এতে ক্রেতারা বলছে তাঁতের কাপড় এত দাম দিয়ে কেন কিনব? এই জায়গাতে সরকারের কাছে আমার আহবান জানবো আমাদের তাঁত পণ্যের কাঁচামালের দাম যেন সহনশীল পর্যায়ে রাখা হয় । যেন তাঁতিরা স্বল্প মূল্যে কিনতে পারে এবং তাঁত পণ্য আমরা কম মূল্যে বিক্রি করতে পারি। সেই যায়গায় আমরা সরকারের কাছে সহায়তা চাই।

পাশাপাশি আরো বলব যে, প্রান্তিক পর্যায়ে ডেলিভেরি প্রক্রিয়া খুব পিছিয়ে রয়েছে। যদি ডাকবিভাগকে আধুনিকায়ন করে উপজেলা পর্যায়ে ডেলিভেরি সার্ভিসকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক উদ্যোক্তারা উঠে আসতে পারবে । গ্রামের উদ্যোক্তারা উঠে আসলেই ই-কমার্স খাত আরো শক্তিশালী হবে। সেই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে ঘরে ঘরে ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ডের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এই সমস্ত নীতিমালা মেনে যদি আমরা কিছু কাজ করতে পারি, আশা করছি সামনের বছড় আসতে আসতে আমাদের ই-কমার্স সেক্টর আরো এগিয়ে যাবে। 

ঢাকা/ সিনথিয়া

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়