হাতীবান্ধায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়েছে ধর্ষকরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর নগ্ন ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকে হাতীবান্ধা উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

 

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রামে। এ নিয়ে গত রোববার মামলা দায়েরের পর ধর্ষণের শিকার ওই মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার-নিরীক্ষার জন্য আজ সোমবার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জনিয়েছেন হাতীবান্ধা থানার ওসি (তদন্ত) জাকিরুল ইসলাম। এ ঘটনায় মেয়েটির পরিবারসহ স্থানীয়রা এ জঘন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ওই মেয়েটিকে তার বাবা বাড়ির অদূরে সবজি খেত দেখার জন্য পাঠান। সে সময় তাদের খেতের পাশেই ভুট্টা খেতে উত্তর বিছনদই গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে নুরনবী লোহার ধারালো পাসুন দিয়ে ঘাস তুলছিল। নির্জন মাঠে মেয়েটিকে একা পেয়ে নুরনবী ঘাস কাটার অস্ত্র তার গলায় চেপে ধরে ভুট্টা খেতের ভিতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।

 

মেয়েটির ভাষ্য মতে, শুধু তাই নয় ধর্ষণের সময় সে চিৎকার করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ধর্ষক নুরনবী। পরে তার কাছে থাকা মুঠোফোন দিয়ে অসহায় ওই স্কুলছাত্রীর নগ্ন চিত্র ধারণ করে নুরনবী। এরপর নুরনবী সেই মুঠোফোন দিয়েই প্রাননাথ পাটিকাপাড়া গ্রামের সামছুল হকের ছেলে রাকিবুল ইসলাম নামের আরো এক লম্পটকে ভুট্টা খেতে ডেকে আনে।

 

কিছুক্ষণের মধ্যে রাকিবুল সেখানে উপস্থিত হয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটিকে তারা হুমকি দেয় যে, বিষয়টি কাউকে জানালে তার ধারণকৃত নগ্ন ভিডিও চিত্র কম্পিউটার, ইন্টারনেটসহ সকল মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে। এতে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী লজ্জায় বিষয়টি পরিবারসহ কাউকে জানাতে পারেনি।

 

এই অবস্থায় পরদিন মেয়েটি স্কুল যাওয়ার পথে ফের ওই দুই ধর্ষক মেয়েটিকে ভুট্টা থেতে যাওয়ার জন্য বলে। এবং হুমকি প্রদান করে।ভিডিও চিত্র প্রকাশের ভয়ে নিরুপায় হয়ে আবার সেই ভুট্টা খেতে যায় মেয়েটি।

 

এরপর কয়েকদিন ওই দুই লম্পট মেয়েটিকে ধর্ষণের পর আরো কয়েকজন ছেলের মুঠোফোনে সেই নগ্ন ভিডিও চিত্রটি ছড়িয়ে দেয়। ওইসব ছেলেরাও মেয়েটিকে স্কুল যাওয়া-আসার পথে তা দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিলে মেয়েটি বাধ্য হয়ে বিষয়টি পরিবারকে জানায়। কিন্তু ততক্ষণে আশপাশের গ্রামে বাজারে বেশ কিছু ছেলের কাছে ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ে।

 

এই অবস্থায় মেয়েটির বাবা গত রোববার রাতে হাতীবান্ধায় থানায় তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের পর বিবস্ত্র করে ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগ করে। থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে ওই রাতেই আসামিদের ধরতে অভিযান চালায়। সোমবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

 

হাতীবান্ধা থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম জানান, মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/লালমনিরহাট/৩০ মার্চ ২০১৫/মোয়াজ্জেম হোসেন/সনি