ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ওয়াকিল আহমেদ-এর তিনটি কবিতা

ওয়াকিল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৯, ২৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়াকিল আহমেদ-এর তিনটি কবিতা

|| নোনা জলে ||

 

নোনা জলে ভেজা

স্মৃতিময় সুবাসিত তুমি

বুকের কোটরে তুলে রাখা,

ভাঁজে-ভাঁজে জমে আছো

মখমলি গন্ধ মাখা।

মাটির খাঁচায় পোষা যক্ষের ধন

কী মায়ায় ঢাকা রহস্য তুমি

ছড়িয়ে আছো নদীর মতন।

 

তিমির ঘন অন্ধকারে

জোনাকির নরম আলোয়

মাঠার মতো কুয়াশার মেঘে

একসঙ্গে হাতে হাত রেখে

পায়ে-পায়ে হেঁটে গেছি দূরে

স্বর্গের পথে কতো।

 

কবে কোন সোনালী সন্ধ্যায় দুরন্ত রিকশায়, পেছনে ঝুঁকে দেখেছিলো আমাকে,

কে এক কিশোরীর-

ঘার বাঁকা করে তাকানো সুচিত্রা-মুখ।

আজও অম্লান সেই মোহনীয় স্বর্গীয় সুখ।

 

তোমার সবুজ ভুবনের-

ছাঁয়া সুনীবিড় নিপাট উঠানে,

পরম প্রেমের মিলনে

আজো নোনা জলে ভিজি

আমি নোনা বর্ষণে

 

মনে হয়, এ ভুবনই স্বর্গ, ভালোবাসাই শ্রেষ্ঠ পুরাণ।

 

 

|| তুমিও থাকবে না ||

 

পোশাকি মুখোশ খুলে

সমাহিত মানুষের কথা ভাবো

তোমারই মতন এই পৃথিবীতে সেও

এসেছিলো বিলীন হতে।

 

শরীর থেকে অহঙ্কারের চাঁদর খুলে

হেঁটে যাও কন্টকিত পথে-

সমাহিত মানুষের ভাবনাই পারে

তোমাকে মানুষ বানাতে।

 

মাতৃগর্ভে লালিত মানুষ জন্মেই একা হয়ে যায়

একা হয় সন্তান-শরীর থেকে জননীও।

একদিন যেভাবে হাড় থেকে খুলে যায়

প্রিয় রক্ত-মাংস, কেউ থাকে না কারো-

আমিহীন তুমিও থাকবে না আর

থাকবে না এই অবিশ্বাস ও অহঙ্কার।

 

সমাহিত মানুষের দিকে তাকাও

মুখ থেকে মুখোশ খুলে দাও।

 

 

|| অথই অসুখ ||

 

মনে তো পড়তেই পারে,

মনে পড়ে রোজ

তুমি কি রাখো তার খোঁজ!

প্রতিদিন সকালে ঘুম ভেঙে গেলে

দুচোখে ভাসে মায়া-মুখ,

বসন্তের বাতাসে ভরে বুক,

সুখের মতো খেলা করে

অথই অসুখ।

 

হৃদয়ে রক্তক্ষরণে অনুভূতির

অকাল মরণ!

স্মৃতি যেন আলপিন

বেদনাময় রাত্রিদিন।

কীভাবে করবে পরিশোধ

কিশোর ভালোবাসার রঙ্গীন

সেই ঋণ?

 

হয়তো একদিন হবে দেখা

জীবন-মৃত্যুর শূন্য রেখায়।

থাক না নয়ন পলকবিহীন

পাথরের মতো প্রতীক্ষায়।

 

তোমাকে যাবে না ভোলা

বুকের পিঞ্জরে থাকে

যতক্ষণ প্রাণ,

তোমাকে ভোলার বেদনা

আমার মৃত্যুর সমান।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ আগস্ট ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়