ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘কই যাব, পেছনে জায়গা নেই!’

রফিকুল ইসলাম মন্টু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ২৫ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কই যাব, পেছনে জায়গা নেই!’

রফিকুল ইসলাম মন্টু: ভেজা বিকেল। ন্যূয়ে পড়া কলাগাছের ডগায় বসেছিল কয়েকটি বৃষ্টিভেজা কাক। ঠিক যেন ঝিমিয়ে পড়া বিকেলটার মতোই। ওরাও যেন বেশ ক্লান্ত। ঘূর্ণিবায়ু আর বৃষ্টির ঝাপটাটা ওদেরও ভিজিয়ে দিয়ে গেছে। মাঠে জমেছে পানি। গরু-মহিষ ঘরের পথে। বাতাসের জোর পেয়ে খানিক দূরে উত্তাল মেঘনার পানি লাফিয়েই চলেছে। কানে আসছে ঢেউয়ের শব্দ। দ্বীপ মদনপুরে আজকের সকলে তাঁতানো রোদ থাকলেও বিকেলটা ম্রিয়মান। যেন সবকিছু ঝিমিয়ে পড়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর শেষ বেলায় পশ্চিম আকাশে মেঘ সরিয়ে উঁকি দিয়েছে সূর্যের একাংশ। আর তাতেই মেঘে ঢাকা আকাশটা যেন আলোকিত।

চরপদ্মা। চেয়ারম্যান বাজার। একটি দ্বীপের আবার থাকে অনেক নাম। ভোলার দৌলতখানের দ্বীপ মদনপুরের এই অংশটা চরপদ্মা নামে পরিচিত। এটা পড়েছে ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরে ইউনিয়ন পরিষদের পাকা দালানের সামনের রাস্তা ধরে হাঁটছি। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিকন খাল। ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের পাশের নলকূপ থেকে পানি নিতে এসেছে কয়েকজন। ভেজা রাস্তায় হাঁটা মুশকিল। এই রাস্তায় চলাচল করতে প্রয়োজন বিশেষ ধরণের পাদুকা। সেটা যদিও সাথে নেই- অতি সতর্কতার সঙ্গেই সামনে আগাতে হলো। বিকেলের এই সময়টাতে আজ ভাটা। বড় নদীর সঙ্গে জোড়া লাগানো দ্বীপের ছোটন নদীগুলো একেবারেই শুকনো। রাস্তার পাশের চিকন খালের পাড়ে ক’জন নারী হাড়িপাতিল ধোয়ায় ব্যস্ত। অপরিচিত লোক দেখে মাথার কাপড়টা টেনে দিলেন অনেক খানি। বেশিরভাগ নারী অপরিচিত পুরুষদের সামনে পড়তে বিব্রতবোধ করেন।

চেয়ারম্যান বাজারের দোকানপাটগুলো এখন বেশ অচেনা। আগে ঘরগুলো মাটির সঙ্গে লাগানো ছিল। এখন মাচা পাতা। মাটি থেকে অন্তত ৫-৬ ফুট উঁচুতে ঘর। কাঠের পাটাতন। তার ওপর দোকান। কেন মাচা পাততে হলো। সেখানকার মানুষের সহজ জবাব- জোয়ারের পানিতে সব ডুবে যায়। জোয়ারের সময় নৌকায় চলাচল করতে হয়। সে জন্যে মাচা পেতে দোকান। কিন্তু আগে চেয়ারম্যান বাজারের এমন অবস্থা ছিল না। বেশ জমজমাট বাজার ছিল, অনেক দোকানপাট ছিল। বহু ক্রেতা ছিল। বিকেল হলেই আশাপাশের লোকজন ভিড় করতো এই বাজারে। জমজমাট আড্ডা হতো। খাবারের দোকানগুলোতে টিভি চলতো। সূর্যবাতির আলোয় আলোকিত হতো বাজার। কাজ না থাকলেও স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত, কিছু খুচরো আলাপ, কিছু জরুরি আলাপ কিংবা শ্রেফ টিভিতে একখানা সিনেমা দেখার জন্যে হলেও মানুষের ভিড় থাকতো বাজার জুড়ে। এর আগে কয়েকবার এসে এখানকার যে অবস্থা দেখে গিয়েছি, তার সঙ্গে আজকের চেয়ারম্যান বাজারের কোন মিল পেলাম না। সময়ের ধারায় বদলেছে সব।

সিঁড়ি বেয়ে নূর আলম পাটোয়ারির দোকানে উঠি। মুদি দোকান। চাল, ডাল, তেল, নুন, নানান কিছু আছে দোকানে। মাটি থেকে প্রায় ৬ ফুট উঁচু পাটাতনের ওপরে দোকান। কাঠের পাটাতন। ঘরের পশ্চিম পাশটায় চৌকি। দক্ষিণে জানালা। দূরে বাড়ি যাওয়া হয় না অনেক সময়। তাই নূর আলম এখানেই ঘুমান রাতে। তাছাড়া দোকানও পাহারা দিতে হয়। চৌকির ওপরের পাতলা কাঁথাটা সরিয়ে সেখানেই আলাপে বসি। কাষ্টমার নেই। দোকানি নূর আলম অলস সময় কাটাচ্ছেন। দোকানের সামনে একছড়া বিচি কলা ঝুলছে। বাড়ির গাছ থেকে আনা। কয়েকটি একটু লালচে হয়েছে। আগ্রহ দেখানোতে নূর আলম নিজেই কলা ছিড়ে দিলেন। সঙ্গে চা দিলেন। মুদি দোকান হলেও পুষিয়ে নেওয়ার জন্য চা-বিস্কুট, বিড়ি-সিগারেট, এলাকা থেকে পাওয়া ফলফলাদিও রাখেন দোকানে। এই দোকানে বসেই অন্য দোকানগুলোতে চোখ যায়। দোকানি ছাড়া কোন ক্রেতাই চোখে পড়ল না। কেমন আছেন? প্রশ্ন করতেই নূর আলম পাটোয়ারীর এক কথায় জবাব, কেমন আছি তা তো আমাকে দেখেই বুঝতে পারছেন। 

: বেচাকেনা কেমন চলে?

: ভালো না।

: কেন?

: লোকজন অন্যত্র চলে গেছে। কেনার লোক নাই।

: তাহলে রোজগার?

: রোজগার নাই। অন্য কোন কাজে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই আছি।

: কত বছর দোকান করেন?

: ২৫ বছর।

বেচাকেনা নেই। তবুও দোকান নিয়ে বসে আছেন নূর আলম পাটোয়ারী। ৬ জনের সংসার। কীভাবে চলে তার? সহজেই অনুমান করা যায়। ধারদেনা, কষ্টক্লেশে জীবন পার। তার ওপর আছে ভাঙন। নদীন ভাঙন এ এলাকার মানুষের জীবন তছনছ করে দিয়েছে। ঠিক নূর আলমের মতোই। দ্বীপ মদনপুরে এসে দোকান বদল করেছেন তিনবার। আগে দোকান ছিল অনেক বড়। এখন ছোট করে এসেছেন। প্রায় ১৪ বছর আগে ভোলার ধনিয়া এলাকা থেকে এই দ্বীপে আসেন তিনি। ওপারেও এই ব্যবসা ছিল বলে এখানেও আর পেশা বদল করেননি। কিন্তু আগামীতে ব্যবসায় টিতে পারবেন কীনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

কথা বলতে বলতে আরেক বার বৃষ্টির ঝাপটা। সঙ্গে ঘূর্ণিবায়ু। নূর আলমের দোকানটা নাড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাসে হেলে পড়ছে পাশের গাছগুলো। দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে জানালা দিয়ে তাকাই দক্ষিণে। খোলা মাঠে বৃষ্টির মাঝেই এক বৃদ্ধ দুটো মহিষ ঘরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। লাঠির শপাং শপাং আওয়াজ কানে এলো। পারলেন না বৃদ্ধ। মহিষ দুটো শুয়ে পড়লো। ওরা বোধহয় বৃষ্টিটাকেই উপভোগ করছে। টিনের চালের ওপর বৃষ্টির শব্দ আমারও তখন বেশ ভালো লাগছিল। আমার ক্যামেরার মুখে লাগানো ৫৫ বাই ৩০০ লেন্স। তাই দূরে। দেখি ধূ ধূ বাড়িঘর, খোলা মাঠ, মেঘনা নদী। মেঘনা নদীতে নৌকাগুলোরও বেশ কয়েকটি দেখতে পাই। শার্টার টিপি। বৃষ্টিকালের অনেকগুলো ছবি পাই।

বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে দৌড়ে এসে নূর আলম পাটোয়ারীর দোকানে উঠলেন আরও কয়েকজন। এরমধ্যে একজন আমার চেনা। আগেরদিন লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট ঘাট থেকে ট্রলারে আসার সময় পরিচয় হয়েছিল। তার নামও নূর আলম। বাজার থেকে খানিক দূরে নদী পাড়ের কলোনিতে তার বাড়ি। সেদিন ট্রলারে আসার সময়ও নদীর মাঝখানে আজকের মত এমন বৃষ্টি ঝড়েছিল। প্রবল বাতাসও ছিল। ট্রলারে বৃষ্টি হলে যাত্রীদের রক্ষা করতে আছে বিশেষ ব্যবস্থা। একটি বড় পলিথিন দিয়ে গোটা ট্রলার মুড়ে দেওয়া হয়। খোপে যেভাবে হাঁসমুরগি থাকে, যাত্রীরা বসে থাকেন ঠিক সেভাবে। নূর আলম আমার পাশে থেকে আমাকে বৃষ্টি থেকে রক্ষার চেষ্টা করছিলেন। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এই এলাকা, অর্থাৎ নূর আলমের বাড়ির পাশ দিয়ে ট্রলারটি যাচ্ছিল। নূর আলমসহ আরও অনেক যাত্রী লাফিয়ে পড়ল ট্রলার থেকে। নূর আলম বলেছিলেন- এলাকায় এলে যেন তার বাড়িতে যাই। কিন্তু বাড়িতে আর যেতে হলো না- দেখা পেলাম চেয়ারম্যান বাজারে।

নূর আলমের সঙ্গে এসেছে তার বন্ধু মুনির হোসেন। বৃষ্টির সময়টা ওদের সঙ্গে আলাপেই কাটলো। নূর আলমের বয়স কতোই বা, ২৭-২৮। এতটুকু জীবনেও তার অনেক বড় গল্প। বাড়ি ছিল লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার কালকিনি ইউনিয়নের কাঁকড়ার চর। সে বাড়ি অনেক আগে হারায় মেঘনার অতলে। তখন নূর আলম ছোট। থাকেন বাবার সঙ্গে। বাবা ঠিক করলেন, ওই এলাকায় আর থাকা যাবে না। অনেক কষ্ট করে, ধারদেনা করে, জমানো টাকা একত্রিত করে বাড়ি করেন নোয়াখালীর মাইজদী এলাকায়। এরমধ্যে বাবা কাঞ্চন আলীর প্রস্থান ঘটে। মা রেনু বিবিসহ চার ভাই সেখানেই থাকতেন। কিন্তু কী মনে করে নূর আলম এই মদনপুর চরে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে। আর সেই প্রয়োজনেই এখানে বসতি। নিজের বাড়ি করার সামর্থ্য হয়নি। অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে, অথবা অন্যের নামে বরাদ্দ কলোনির ঘর কিনে নিয়ে। এভাবেই চলছে জীবনটা। অন্যের জীবনের প্রয়োজনে শুধু নাম দস্তখতটুকু শিখেছেন। তবে ছেলে হাসান আর মেয়ে রাবেয়াকে লেখাপড়া করানোর স্বপ্ন দেখেন নূর আলম। সেদিন ট্রলারে তার সঙ্গে গল্প শুরু। অনেক কষ্টে আছেন। অনটনের ভেতর দিয়ে চলছে। ঝড়ের দিন এলে ঘর বদলানোর চিন্তা। সব মিলিয়ে সংকটের জীবন। তবুও মুখে তার হাসির রেখাটা যেন একটু সময়ের জন্যেও মিলিয়ে যায় না।

নূর আলমের বন্ধু মুনির হোসেনও এই দ্বীপেরই একজন শ্রমজীবী। নূর আলমের সঙ্গে কথা বলার সময় খব মন দিয়ে শুনছিলেন। মাঝে মাঝে কথার সূত্র ধরে যোগ করছিলেন এটা ওটা। আসলে নূর আলম, মুনির হোসেন, কিংবা এদের পাশে আরও দশজন দাঁড়া করলেও, তাদের সকলের অবস্থাই একই রকম। মুনির হোসেন আগে মাছ ধরতেন, এখন সে পেশা ছেড়ে কাঠমিস্ত্রী। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এই দ্বীপে এসে ঠাঁই নিয়েছিলেন। কিন্তু এখানেও নদী ভাঙন। বেশ কয়েকবার বসতি বদল করতে হয়েছে। স্ত্রী মরিয়ম বিবি আর চার ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার মুনিরের। কথার ফাঁকে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে মুনিরের কণ্ঠ থেকে বের হয়, ‘আমরা কোথায় যাবো। পেছনে তো আর জায়গা নেই।’
 


মুদি দোকানি নূর আলম পাটোয়ারির দোকানে বসেই এই বাজারের সবগুলো দোকানপাট দেখা যায়। দোকানগুলো গোনা যায়। মুদি দোকান আছে তিনটি- একটি নূর আলম পাটোয়ারীর, একটি মিজানুর রহমান জান্টুর, অপরটি সফিক মাল-এর। আবুল কালাম মুন্সি, আলী চৌকিদার, মো. আলো আর শামীম মুন্সির চারটি চা-পানের দোকান আছে এখানে। এ বাজারের এক মাত্র মাছ ব্যবসায়ী নাছির চৌকিদার। একটি মাত্র কাপড়ের দোকান আবুল কালামের। এখানে একমাত্র ওষুধের দোকান সুরেন ডাক্তারের। বাজারের পশ্চিম পাশে ঠিক দোকান ঘরগুলোর মতোই পাটাতনের ওপর বানানো হয়েছে মসজিদ। এক পাশে লম্বা বাঁশের মাথায় মাইক। এই মাইকেই দিনে পাঁচবার আজানের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। শেষ বেলায় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর কিছু মানুষ রাস্তায় বের হয়। এদের অনেকে আবার পুরানো চেয়ারম্যান বাজার কিংবা পাটোয়ারি বাজারের পথে। আমিও তাদের দলে। হাঁটি এবং যাকে সামনে পাই- তার সঙ্গেই কথা বলি।

আলাপে জানতে পারি, মদনপুর দ্বীপের দক্ষিণ দিক ক্রমাগত ভাঙছে। বহু মানুষ এ এলাকা থেকে অন্যত্র চলে গেছে। কিছু মানুষ আবার এ এলাকায়ই কোনভাবে মাথাগুঁজে আছেন। ভাঙনের কারণেই চেয়ারম্যান বাজারটি দু’খন্ড হয়েছে। পুরানো চেয়ারম্যান বাজারের পাশে ইউনিয়ন পরিষদের দালান এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের ঘরও ঝুঁকির মুখে আছে। দ্বীপের মানুষজন আছে নিয়তির ওপরই ভর করে বেঁচে আছেন। নদীতে ভাঙন দেখা দিলে তাদের কিছুই করার নেই। দ্বীপের নদীর তীর রক্ষার দাবি কেউ তোলে না। কারণ, যেখানে অতি প্রয়োজনীয় ব্রীজ-কালভার্ট রাস্তাঘাটের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না- সেখানে নদঅর ভাঙণের তীর রক্ষার দাবি তোলা অবান্তর বলেই মনে করেন এখানকার বাসিন্দারা। তাইতো ভরসা এক আল্লাহ। তারা মাটি আঁকড়ে ধরে টিকে থাকার লড়াই করে। এক দিকে জীবিকা, অন্যদিকে আবাস রক্ষা। দ্বীপের ৮নং ওয়ার্ডের ৬০টি পরিবার এভাবেই একটি কলোনীতে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে। ঘর থেকে নদী খুবই কাছে। এর পরে এরা কোথায় যাবে- তা এখনও ঠিক হয়নি।

পুরানো চেয়ারম্যান বাজারে নূর আলমের দোকানে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়। এটা আবার খাবারের দোকান। ভাতও পাওয়া যায়, আবার পুরি, পরোটা, জিলাপি ইত্যাদিও পাওয়া যায়। এ এলাকার খাবারের দোকানগুলো একটু বড়সড় করতে হয়। কারণ এক কোনে টিভি রাখা হয়। বাংলা সিনেমার দর্শকের সংখ্যা থাকে অনেক। তাদের বসতে দিতে হয়। সিনেমা দেখার ফাঁকেই এটা ওটা বেচাকেনা। সন্ধ্যা থেকে এভাবেই চলে অধিক রাত অবধি। আলাপ হচ্ছিল দোকানি নূরে আলমের সঙ্গে। দোকানের সঙ্গেই তার থাকার ঘর। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন। এই দ্বীপে তার বাড়ি-দোকান নদীর পেটে গেছে চারবার। ঘর বদল করতে করতে লাভের খাতায় আর কিছু জমা হতে পারে না। সুন্দর গোছানো দোকান এখন আর গুছিয়ে রাখতে পারছেন না। প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত দেনা। দোকানে তার বাবা আবু তাহেরকে দেখলাম- তিনিও কাজ করছেন, ছেলেকে সহায়তা করছেন। টিভিতে সিনেমা চলছে। একে একে আসছে দর্শক। পুরি আর চা আসে আমার সামনেও।

মাগরিবের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। এ বাজারের মসজিদে মাইক নেই। মসজিদটাই আছে কোনমতে। মসজিদ ঘরের চালা কবে উড়ে গেছে কে জানে? বাজারের এক কোনে অবশিষ্ট আছে খুঁটির ওপর ছোট পাটাতন। ৭-৮ জন হয়তো বসতে পারেন। আজান শেষ হতে না হতেই ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে গেছেন কয়েকজন। ওদিকে খেয়াঘাটে ভোলা সদরের নাছিরমাঝি ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে শেষ খেয়া। মদনপুরে নেমে আসে আরেকটি রাত।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ আগস্ট ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়