ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প

রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ছবি: আল জাজিরা

নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে যেসব দেশহীন-গৃহহীন, নিঃস্ব মানুষ অন্য দেশে আশ্রয় নেয় তারাই শরণার্থী হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে ৭ কোটিরও বেশি মানুষ শরণার্থী হিসেবে জীবনযাপন করছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ ধর্ম বা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এই অবস্থায় চলুন জেনে নেই বিশ্বের বড় কয়েকটি শরণার্থী ক্যাম্প সম্পর্কে।

কুতুপালং, কক্সবাজার: মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের মাধ্যমে নির্যাতিত হয়ে, প্রাণ রক্ষায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ছুটে আসে বাংলাদেশে। গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার দুই বছর পূর্তি হলো। ২০১৭ এর ২৫ আগস্ট থেকে ৭ লাখ ৪০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের বেশিরভাগই আছে কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে। সেখানে ৬ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।  সংখ্যার হিসাবে এটাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প। রোহিঙ্গাদের অবশ্য নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জোর কূটনৈতিক চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সহযোগিতায় মিয়ানমারের সাথে একের পর এক বৈঠক চলছে। চীন ও ভারতের সহযোগিতাও এক্ষেত্রে পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তবে এরই মাঝে শরণার্থী ক্যাম্পে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছে রোহিঙ্গারা। এখন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ও অক্সফামের সহায়তায় শরণার্থী ক্যাম্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন দেড় লাখ মানুষের বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে।

বিদিবিদি, উগান্ডা: ২০১৩ সালে দক্ষিণ সুদান থেকে গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের কারণে সেখানকার মানুষ উগান্ডার উত্তরাঞ্চলে আশ্রয় নেয়। এখন পর্যন্ত সেখানে ২ লাখ ৮৫ হাজারের মতো শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।

দাদাব, কেনিয়া : গত প্রায় ২৬ বছর ধরে কেনিয়ার সীমান্তে দাদাব এলাকায় নিপীড়িত সোমালিয়ার নাগরিকরা এসে জমায়েত হচ্ছে। ১৯৯১ সালে সোমালিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ও পরে দুর্ভিক্ষের কারণে সেখানকার নাগরিকরা পালিয়ে আশ্রয় নেয় দাদাবে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক হিসাবে জানা গেছে, সেখানে সোমালি শরণার্থী আছে ২ লাখ ৩৯ হাজার। তবে এই ক্যাম্পে জঙ্গি গ্রুপ শাদাবের সদস্যরা প্রশিক্ষণ নেয়- এমন অভিয়োগ তুলে কেনিয়ার সরকার দাদাব এলাকাটি অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। পরে কেনিয়ার হাই কোর্ট সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে।

কাকুমা, কেনিয়া: ১৯৮৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সুদানে যে গৃহযুদ্ধ চলে, সে কারণে দক্ষিণ সুদানের নাগরিকরা পালিয়ে আসে কেনিয়ায়। দেশটির কাকুমায় ১৯৯২ সালে গড়ে তোলা শরণার্থী ক্যাম্পে মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার শরণার্থী আছে। সেখানে সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার শারণার্থীরাও আছে।

নায়ারুগুসু, তানজানিয়া: পার্শ্ববর্তী যুদ্ধ কবলিত দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো থেকে নিপীড়িতরা তানজানিয়ার সামীন্তবর্তী এলাকায় আশ্রয় নেয়। তাই ১৯৯৬ সালে গড়ে তোলা হয় একটি শরণার্থী ক্যাম্প। পরবর্তীতে রাজনৈতিক সমস্যার কারণে সেখানে আশ্রয় নেয় অনেক বুরুন্ডিবাসী। বর্তমানে সেখানে ৪৭ শতাংশ বুরুন্ডিবাসী রয়েছে। 

জাতারি, জর্ডান: ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সিরিয়া থেকে ৫০ লাখের বেশি মানুষ অন্য দেশে চলে গেছে। বর্তমান সময়ে এটি সবচেয়ে বড় মাইগ্রেশনের ঘটনা। এদের মাঝে ৮০ হাজারের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে জর্ডানের জাতারি শরণার্থী ক্যাম্পে। এছাড়া ৩০ লাখেরও বেশি সিরিয়ান তুরস্কে চলে গেছেন। তাদের মাঝে অবশ্য ১০ শতাংশের মতো সিরিয়ান আছেন তুরস্কের বিভিন্ন ক্যাম্পে। এছাড়া লেবানন সরকার জানিয়েছে তাদের দেশে ১৫ লাখের মতো সিরিয়ান বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।



ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়