চিত্রা পাড়ের নান্দনিক চিত্রশিল্পীর জন্মদিন আজ
নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
চিত্রা নদীর পাড়ে মাছিমদিয়া গ্রামে ১৯২৩ সালের আগস্ট মাসের ১০ তারিখে অভাবের সংসারে জন্ম লালমিয়ার। সেই শিশুটিই একদিন হয়ে উঠলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। যাকে আমরা আজ এস এম সুলতান নামে চিনি।
এস এম সুলতান মানে হচ্ছে শেখ মোহাম্মদ সুলতান। যিনি জীবনের মূল সুর-ছন্দ খুঁজে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, কৃষক এবং কৃষিকাজের মধ্যেই তার শিল্পকর্মে আমরা আবহমান বাংলার সেই প্রতিচ্ছবিই দেখতে পাই।
চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৭০ বছরের বোহেমিয়ান জীবনে তিনি তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামে ভেজা মেহনতী মানুষের সাথে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেছেন “পাট কাটা”, “ধানকাটা”, “ ধান ঝাড়া”, “ধান ভানা”, “ জলকে চলা”, “ চর দখল”, “গ্রামের খাল”, “গ্রামের দুপুর”, “নদী পারা পার”, “ধান মাড়াই”, “জমি কর্ষনে যাত্রা”, “মাছ ধরা”, “নদীর ঘাটে”, “গুন টানা”, “ফসল কাটার ক্ষনে” , “শরতের গ্রামীন জীবন”, “শাপলা তোলা”র মত বিশ্ব বিখ্যাত সব ছবি।
তিনি ছিলেন একজন সুরসাধক এবং বাঁশিও বাজাতেন। ১৯৮২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ম্যান অব এশিয়া পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে তার ছবি সমকালীন বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভেদর দালি, পল ক্লী, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়। সুলতানই একমাত্র এশিয়ান শিল্পী যার ছবি এসব শিল্পীদের ছবির সঙ্গে একত্রে প্রদর্শিত হয়েছিল।
কালোত্তীর্ণ এই শিল্পী ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্সিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে রাষ্টীয় ভাবে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এই বরেণ্য চিত্রশিল্পীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ নড়াইলের জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা।
ঢাকা/শাহ মতিন টিপু
আরো পড়ুন