ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

যশোরে নারীদের নেতৃত্বে প্রথম দুর্গাপূজা

সাকিরুল কবীর রিটন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ২৪ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৫:১৩, ২৫ অক্টোবর ২০২০
যশোরে নারীদের নেতৃত্বে প্রথম দুর্গাপূজা

প্রথমবারের মতো যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের সুজলপুর গ্রামে নারীদের নেতৃত্বে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সদস্যদের নেতৃত্বে এই পূজা আয়োজিত হচ্ছে। 

যশোরের পূজার ইতিহাসে এটি নারীদের নেতৃত্বে প্রথম পূজা এটি। একই সঙ্গে পুরোহিতসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই দলিত যেটি সনাতন সমাজের প্রথা ভেঙে নতুনের দিকে যাত্রা।

নমঃশুদ্র, পৌন্ড্র ক্ষত্রিয়,  ঋষি, জেলে, ডোম, হেলা, পাটনী কায়পুত্র, বাগদী, খাসি, বুনো, সরদার, কর্মকার, নানা সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষদেরকে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাবশালীরা তাদেরকে যেমন কোথাও স্থান দেয় না, একই সঙ্গে সম্মানও দেয় না। 

আবার দলিত নারীদেরও তাদের সম্প্রদায়ের পুরুষেরা ঘরের বাইরে বের হতে দেয় না। ফলে তারা নিন্ম জাতেরও নিন্ম শ্রেণিতে অবস্থান করে। সেজন্য শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নারীদের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে পূজার এই ইতিহাস তৈরির আয়োজন বলে জানান পূজা কমিটিতে থাকা দলিত নারীরা। 

পূজা উদযাপনের জন্যে গঠিন ১০ সদস্যের ১০ জনই নারী। এর আগে যশোরের পূজা উদযাপনের ইতিহাসে এমনটা কখনও হয়নি।
শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার শারদীয় দুর্গোৎসবের সভাপতি জয়ন্তী রানী দাস ও সাধারণ সম্পাদক আয়নামতি বিশ্বাস। কোষাধাক্ষ্যের দ্বায়িত্বে আছেন আরতি দাস।

পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আয়নামতি বিশ্বাস বলেন, ‘আমার বয়স ৩৫ অথচ আমিই প্রথম দলিত নারী যে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি। এর পরেও অল্প কয়েকজন দলিত নারী শিক্ষিত হতে পেরেছে। অথচ এখানে প্রায় ৮০০ জন দলিতের বাস। কেবল আমাদের মেয়েরাই নয়, ছেলেরাও শিক্ষা ও অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে। এজন্য আমরা নারীরা এগিয়ে এসেছি অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে। এই পরিবর্তনের ধাপ হচ্ছে দুর্গাপূজা, দুর্গা মায়ের আর্শীবাদে এবার থেকে আমরা পরিবর্তন ঘটাতে পারবো আমাদের অবহেলিত জীবনের।’

শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার পূজা আয়োজনে পুরোহিতের দ্বায়িত্ব পালন করা নীলরতন দাস বলেন, ‘আমি নিজেও দলিত সম্প্রদায়ের। আমরা পূজা শুরু করলে ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে বাধা পেতাম। সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। দলিত নারীরা সমাজের আরও নীচের স্তরে আছে। তাদের নেতৃত্বে এই পূজা তাদেরকে মর্যাদার আসনে বসাবে। আমি এই পূজার দ্বায়িত্ব পেয়ে গর্বিত।’

যশোর/সনি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়