ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ফ্যাভিপিরাভিরে ১০ দিনে ৯৬ শতাংশ করোনামুক্ত: বিকন ফার্মা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৭, ৮ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ফ্যাভিপিরাভিরে ১০ দিনে ৯৬ শতাংশ করোনামুক্ত: বিকন ফার্মা

করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘ফ্যাভিপিরাভির’ ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে।

ঢাকায় করোনা আক্রান্তদের ওপর পরিচালিত পরীক্ষায় ৯৬ শতাংশ রোগী সেরে ওঠেছেন।  বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটি (বিএসএম) এই ট্রায়াল পরিচালনা করে।

বুধবার (৮ জুলাই) ঢাকায় এক সেমিনারে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের এই ফল জানান ট্রায়াল নেতৃত্বদানকারী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির।  তিনি করোনা রোগীদের ওপর ফ্যাভিপিরাভির ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা শীর্ষক তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন।  সেমিনারের আয়োজন করে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির বলেন, বাংলাদেশের চারটি হাসপাতালে ৫০ জন রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়।  হাসপাতালগুলো হলো—কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই ওষুধ প্রয়োগের ৪ দিনের মাথায় ৪৮ শতাংশ এবং ১০ দিনের মাথায় ৯৬ শতাংশ রোগী করোনাভাইরাস মুক্ত হয়েছেন বা সেরে ওঠেছেন। পরীক্ষার সময় প্লাসেবো (যাদের বিকল্প ওষুধ দেওয়া হয়, বাস্তবে তা ওষুধ নয়) ক্ষেত্রে এই হার ছিল চারদিনের মধ্যে শূন্য শতাংশ এবং ১০ দিনের মধ্যে ৫২ শতাংশ।  বিকল্প ওষুধ গ্রহণকারীদের চেয়ে এই ওষুধে রোগীর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা তিনগুণ উন্নতি হয়েছে।

সেমিনারে জানানো হয়, ওষুধটি কার্যকর ও নিরাপদ কি–না তা জানার জন্যই মূলত বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়।  এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা ট্রায়াল’। ঔষধ প্রশাসন ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের নিয়ম মেনে এই ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়। 

ঢাকায় পরিচালিত পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, বিকল্প ওষুধ গ্রহণকারীদের চেয়ে ফ্যাভিপিরা গ্রহণকারীদের ৪৪ শতাংশের বেশি সেরে ওঠেছেন।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি প্রফেসর ড. বিল্লাল আলম বলেন, এই ওষুধ ব্যবহারে আমরা সন্তষ্ট। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যসেবা দানকারীদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুর রহমান বলেন, ঢাকা ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে– বাংলাদেশ গুণগতমানের ওষুধ তৈরি করছে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ বি এম আবদুল্লাহ খুব দ্রুত করোনাভাইরাসের ওষুধ তৈরির জন্য বিকন ফার্মাকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, সফল গবেষণার মাধ্যমে করোনা চিকিৎসায় সঠিক পথ খুঁজে বের করার জন্য সোসাইটি অব মেডিসিন দলকে ধন্যবাদ।

ফ্যাভিপিরাভির হলো ওষুধটির জেনেরিক নাম। বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদিত ওষুধের নাম ফ্যাভিপিরা। এই ওষুধটি জাপানে ফুজি ফিল্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠান তোয়ামা কেমিক্যাল কোম্পানি প্রথম উদ্ভাবন করে। তারা এভিগান নামে বাজারজাত করছে।

করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর চীনে এই ওষুধের প্রথম ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়।  এরপর রাশিয়া এবং সবশেষে ঢাকায় ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়।  এই দুই দেশের মতো ঢাকা ট্রায়ালেও এই ওষুধের একই রকম কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।

 

সাওন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়