ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রোগীর চিকিৎসায় তাদের ঈদের আনন্দ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ২১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১০:২০, ২২ জুলাই ২০২১
রোগীর চিকিৎসায় তাদের ঈদের আনন্দ

ঈদের দিনে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে রোগী দেখছেন ডা. সাকিল সারওয়ার

ডাক্তার সাকিল সারওয়ার। পিরোজপুর সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার তিনি।  বুধবার (২১ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে রোগী দেখছেন।  ঈদের দিনেও হাসপাতালে রোগীদের সেবায় ব্যস্ত তিনি। আবেগকে হার মানিয়ে দায়িত্ববোধকে ভালোবেসে ঈদের আনন্দ রোগীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন তিনি।

কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে।  সাকিল সারওয়ার রাইজিংবিডিকে বলেন, সবাই ঈদ করে পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে।  আমরা দায়িত্ব পালন করছি ঈদে।  এই দায়িত্ব পালনে শান্তি আছে।  চিকিৎসকদের পেশার সঙ্গে মানবিক ও মানবতা জড়িত। তাই ঈদের দিনে কাজ করাও অন্যরকম আনন্দ আছে। 

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলের মেডিক্যাল অফিসার শামীমা আক্তার বলেন, ঈদের দিনে দিনের একটি বড় সময়ে আমরা হাসপাতালে অবস্থান করি। রোগীর সঙ্গে সংযুক্ত থাকি। এটাই আমাদের পেশার অংশ, এটাই আমাদের ঈদ।

উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর চিকিৎসকদের ঈদের ছুটি কমিয়ে কর্মস্থলে থাকার নিয়ম করা হয়। একই অবস্থা এ বছরেও।  ফলে এবারো অধিকাংশ চিকিৎসকের ঈদের দিন কাটছে রোগীদের সঙ্গে হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে।

ঢাকার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে কোরবানির ঈদে চিকিৎসকদের ছুটি পাওয়া হয়নি।  সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্রও একই। ফলে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীর শয্যাপাশে স্বজনরা না থাকলেও ঈদের দিনে চিকিৎসকের পাশাপাশি স্বজনের দায়িত্ব পালন করছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা।  এর মধ্যে রয়েছেন করোনা আক্রান্ত রোগী।  এছাড়া বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত নন-কোভিড রোগীদেরও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক নার্সরা।  ঈদের ছুটির কথা চিন্তা না করে বরং মহামারির এই সময়ে কী করে রোগীর সেবা করা যায় সেটাই তাদের কাছে মুখ্য।

বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আজও সাধারণ বেডে প্রায় ৮০০ রোগী এবং ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আসিইউ) দুই শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন।

অন্যান্য পেশার লোকজন ঈদের দিনটিতে একান্তভাবে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটাতে পারলেও হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের সকালে পারেন না।  তাই ঈদের সময় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় রুটিন করে চিকিৎসক ও নার্সদের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চিকিৎসকদের এবারও কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে জড়িতরা সেবার কাজ চালিয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম ঠিক রাখতে স্বাভাবিক সময়ে বড় উৎসবে ৬০ শতাংশ চিকিৎসককে ছুটি দিয়ে ৪০ শতাংশ চিকিৎসককে রোগীর সেবায় হাসপাতালে রাখা হয়।  তবে করোনা মহামারি কারণে বিগত চারটি ঈদে চিকিৎসকদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে না।

এরই মধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর। 

অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়, করোনা রোগী সেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি ছুটিকালীন নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।

হাসান/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়