ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘শারীরিকভাবে অক্ষমদের ৫ শতাংশের পুনর্বাসন হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২২  
‘শারীরিকভাবে অক্ষমদের ৫ শতাংশের পুনর্বাসন হয়’

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। সেই হিসাবে দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ পুনর্বাসনের সুযোগ পায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এর জন্য প্রয়োজনের তুলনায় ফিজিওলজিস্টের সংকটকে দায়ী করেছেন তারা।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ও মিটফোর্ড হাসপাতালে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তারা এ সব কথা জানান।

আলোচকরা বলেন, ‘বিশ্বে মোট জনগোষ্ঠীর ১৫ শতাংশ মানুষ শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষ আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রতিবন্ধী। তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ পুনর্বাসনের আওতায় আসে। এ প্রক্রিয়া ফিজিওলজিস্টের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। অথচ আমাদের দেশে ফিজিওলজিস্টের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কম।’ 

তবে দেশে এ পুনর্বাসনকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে তারা বলেন, দেশে প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের সেবার পরিধি বাড়ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০০ এর অধিক এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ১০৩ সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র চালু রয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে তাদের সেবা দেওয়া হয়। দেশের ৩০ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে ১৪টিতে রিহেবিলিটেশন বিভাগ রয়েছে। এছাড়া ৬টি স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ৮ বেসরকারি হাসপাতাল, ৪০ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৬৪ উপজেলায় রিহেবিলিটেশন সার্ভিস চালু রয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা লেনিন বলেন, ‘দেশে ক্রমবর্ধমান হারে প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। আমরা তাদের প্রতিবন্ধী বা অক্ষম না বলে সাহায্য প্রয়োজন এমন মানুষ বলি। অক্ষম শব্দটি তাদের মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়। সারা দেশ থেকে এসব রোগী রাজধানী ঢাকায় আসে। ফলে এত বেশি রোগী হয় যে, সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থায় আমাদের কর্তা ব্যক্তিদের বুঝাতে হবে ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসা জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ছড়িতে দিতে হবে। এতে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে চাপ কমবে। রোগীও ভালো সেবা পাবে।'

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী রশিদুজ্জামান বলেন, ‘যেকোনো সময়, যেকোনো মানুষ ডিজেবল হতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চলাচলের ক্ষমতা ও চোখের দৃষ্টি কমে আসতে পারে। প্রতিবন্ধী মানেই অটিস্টিক না। যেকোনো ডিজেবল ব্যক্তিই প্রতিবন্ধী। যেটা, আমি আপনি সবাই হতে পারি। তাই এ বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। তাদের প্রতি সদয় হতে হবে এবং সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।'

আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (এমআইএস) ও বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন মূল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন। 

অনুষ্ঠানে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. আহমেদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. হাসান মাসুদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. জাহিদুল ইসলাম, নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মনিরুল ইসলাম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. এহসানুল হক খান এবং অধ্যাপক ডা. খুরশীদ মাহবুব প্রমুখ। 
 

রায়হান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়