ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সংকট মোকাবিলায় দেশবাসীকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫৯, ২৯ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সংকট মোকাবিলায় দেশবাসীকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিঠি

করোনাভাইরাসে সংকটময় পরিস্থিতি ভালোর চেয়ে আরও খারাপের দিকে যাবে বলে সতর্ক করলেন বরিস জনসন। ব্রিটেনের প্রত্যেক পরিবারের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে এক দিনে ২৬০ জন মারা গেছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়ে ১ হাজার ১৯ জনে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৯ জন। তাদের মধ্যে আছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত জনসন এখন স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে আছেন। সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনে আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে জানালেন তিনি।

৩ কোটি পরিবারের উদ্দেশ্যে চিঠিতে জনসন লিখেছেন:

করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি তার সর্বশেষটা জানাতে আমি আপনাদের কাছে লিখছি।

মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশের প্রত্যেকের জীবন নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে। করোনাভাইরাসের কারণে শুধু আমাদের ওপর নয়, আমাদের ভালোবাসার মানুষ ও পুরো কমিউনিটির ওপর গভীরছাপ পড়েছে।

আপনার জীবন, ব্যবসা ও কাজে কতটা বাধা তৈরি করেছে সেটা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি, সেটা অপরিহার্য ছিল, কেবল একটি কারণেই।

যদি অনেক মানুষ একসঙ্গে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস) সেটা সারিয়ে তুলতে পারবে না। তাতে অনেকে জীবন হারাতে। এর সংক্রমণ আমাদের অবশ্যই রুখতে হবে এবং যত বেশি সম্ভব জীবন বাঁচাতে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও কমাতে হবে।

আর এ কারণে খুব সহজ একটা নির্দেশনা আপনাদের আমরা দিচ্ছি- আপনারা ঘরে থাকুন।

যে বন্ধু কিংবা আত্মীয় আপনার ঘরে নেই তাদের সঙ্গে দেখা করবেন না। খুব সীমিত কারণে হয়তো আপনি বাড়ির বাইরে যেতে পারেন, সেটা খাবার ও ওষুধ কেনার জন্য হতে পারে। দিনে একবার ব্যয়াম করলেন। আপনি কাজও করতে পারেন, যদি সম্ভব হয় বাসা থেকে।

যখন ঘরের বাইরে যাবেন, তখন একটা ব্যাপার নিশ্চিত করতে হবে। ঘরের বাইরে যে কারও সঙ্গে আপনার দুই মিটার দূরত্ব থাকবে।

এই নিয়মগুলো অবশ্যই মানতে হবে। যদি কেউ নিয়মগুলো ভাঙে, তাহলে পুলিশ জরিমানা করবে এবং জনসমাগম ভেঙে দেবে।

আমি জানি আপনাদের অনেকে আপনার ও পরিবারের ওপর আর্থিক প্রভাব নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছেন। আপনাদের বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ও খাবার পৌঁছে দিতে সরকার তার সামর্থ্য অনুযায়ী সব করবে।

শুরু থেকে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। বৈজ্ঞাণিক ও স্বাস্থ্য পরামর্শ অনুযায়ী আবশ্যিক পদক্ষেপ আরো নিতে হয়, তাহলে আমরা দ্বিধাবোধ করবো না।

আমরা জানি, পরিস্থিতি ভালো হওয়ার চেয়ে আরো খারাপের দিকে যাবে। তবে আমরা সঠিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা যত বেশি নিয়ম মানবো, ততই জীবন বাঁচবে এবং পরিস্থিতিও আগের মতো স্বাভাবিক হবে।

ভাইরাসের সঙ্গে যারা লড়াই করছেন তাদের প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার (এনএইচএস) স্টাফ ও ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্যখাতের ব্যক্তিদের। এই অতি প্রয়োজনীয় সময়ে আমাদের চিকিত্সক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ অনুপ্রেরণাদায়ক।

অবসর নেওয়া হাজার হাজার চিকিত্সক ও নার্স এনএইচএসে ফিরে এসেছে এবং শত শত স্বেচ্ছাসেবী ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে। এটাই তো ব্রিটিশদের উজ্জীবনী শক্তি- আমরা করোনাভাইরাসকে পরাজিত করবো এবং সেটা একসঙ্গে।

এ কারণেই এই জরুরি অবস্থার মধ্যে আপনাদের অনুরোধ করছি, দয়া করে ঘরে থাকুন, এনএইচএসকে রক্ষা করুণ এবং জীবন বাঁচান।


ঢাকা/ফাহিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়