ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘আমার নামের উচ্চারণ কম-লা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘আমার নামের উচ্চারণ কম-লা’

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন তার রানিং মেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভারতীয়-জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে। দেশটির ইতিহাসে তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী যাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর রানিং মেট করা হলো। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন জিতলে যুক্তরাষ্ট্রে  প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন কমলা।

আধা-ভারতীয় নামের কারণে হয়তো কমলা হ্যারিসকে প্রায় অন্যদের কাছ থেকে ভুলভাবে নামের উচ্চারণ শুনতে হতো। ২০১৮ সালে প্রকাশিত তার আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বইতে এ কারনেই তিনি লিখেছেন, ‘আমার নামের উচ্চারণ কম-লা। এর অর্থ হচ্ছে পদ্মফুল, যেটি ভারতীয় সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য প্রতীক। পদ্ম পানির নিচ থেকে বেড়ে ওঠে, এর ফুলগুলো পানির উপরিভাগে থাকে। অথচ এর শেঁকড় নদীর তলদেশে শক্তভাবে প্রোথিত থাকে।’

এই মন্তব্যের মাধ্যমে কমলা হ্যারিস হয়তো তার ভারতীয় সত্ত্বার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ডেমোক্রেট সিনেটর কমলার বাবা-মা দুজনই অভিবাসী। বাবা ডোনাল্ড হ্যারিসের জন্ম জ্যামাইকাতে আর মা শ্যামলা জন্মেছিলেন ভারতে। কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের সঙ্গীত পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছিলেন কমলা ও তার ছোটবোন মায়া। বাবা ছিলেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি পড়াতেন। জ্যাজ মিউজিক তার পছন্দের ছিল। 

কমলার যখন পাঁচ বছর তখন তার বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ক্যান্সার গবেষক শ্যামলা ‘হিন্দু’ ও ‘সিঙ্গেল’ মা হিসেবে মেয়েদের ভারতীয় ঐতিহ্যের মধ্যেই বড় করেছেন। স্থানীয়দের কাছ মা ও মেয়েরা পরিচিত ছিলেন ‘শ্যামলা ও তার মেয়েরা’ হিসেবে।

হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পড়াশোনার পর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আইনে ডিগ্রি অর্জন করেন কমলা। আলামেডা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির দপ্তরে তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০৩ সালে কমলা প্রথমবার নির্বাচনে জেতেন এবং সেন্ট ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি নির্বাচিত হন। তিনি ২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন।  

২০১৫ সালে ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিন তার পরিচয় দিয়েছিল এভাবে- ‘একজন ভারতীয় ক্যান্সার গবেষক ও জ্যামাইকান অর্থনীতির অধ্যাপকের কন্যা, তিনি হচ্ছেন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম নারী, প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান, প্রথম এশীয় অ্যাটর্নি জেনারেল।’ ২০১৭ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার জুনিয়র ইউএস সিনেটর নির্বাচিত হন।

গত বছর ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে ২০ হাজারেরও বেশি সমর্থকের সামনে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থীতার লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন কমলা। প্রথম দিকে তার প্রচারণা বেশ সাড়া ফেললেও স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু নীতি নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থান এবং কিছু কিছু বিষয়ে সুস্পষ্ট যুক্তি প্রদানে ব্যর্থতায় মনোনয়ন দৌড় থেকে ছিটকে পড়েন কমলা। ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বিতর্কগুলোতেও দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে মাঝে মাঝে বিতর্কে বাইডেনের বিরুদ্ধে তাকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

কমলা হ্যারিসকে রানিং মেট হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর বাইডেন এক টুইটে তার সাবকে প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে লিখেছেন, ‘ছোট্ট মানুষটির জন্য এক নির্ভীক যোদ্ধা এবং দেশের অন্যতম সেরা সরকারি কর্মকর্তা।’


 

ঢাকা/শাহেদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়