যুদ্ধবিরতির আহ্বানে শুরু আফগান সরকার-তালেবানের শান্তি আলোচনা

কাতারে দুই পক্ষের শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আফগান সরকার তালেবানদের প্রতি মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

সরকারের প্রতিনিধি দলের নেতা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ জোর দিয়ে বলেছেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে কেউ বিজয়ী হয় না।’ তালেবানরা যুদ্ধবিরতির কোনও কথা উল্লেখ করেনি। তাদের দাবি, ইসলামী আইনে চলতে হবে আফগানিস্তানকে।

দুই পক্ষকে সম্মতিতে পৌঁছাতে উৎসাহ দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘পুরো বিশ্ব চায় আপনারা সফল হন।’

শনিবার দোহায় এক হোটেলে শান্তি আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার দলের নেতৃত্ব দেন আফগানিস্তানের হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলেশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ। অন্য গুরুত্বপূর্ণ বক্তা ছিলেন তালেবানের ডেপুটি নেতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বারাদার ও মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও।

দুই পক্ষের মুখোমুখি আলোচনা হবে সোমবার। এর আগে দেওয়া বক্তব্যে আব্দুল্লাহ মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই শান্তির ব্যাপারে কথা বলেন। ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যদি আমরা একে অন্যের দিকে হাত বাড়ায় এবং শান্তির জন্য সততার সঙ্গে কাজ করি, তাহলে দেশের চলমান সংকটের শেষ হবে।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘জনগণের মনে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উল্লেখযোগ্য উপায়ে সহিংসতা হ্রাস করা।’

শান্তি আলোচনায় সব বিষয়ে দুই পক্ষ শতভাগ একমত নাও হতে পারে বলে মনে করেন আব্দুল্লাহ। সেক্ষেত্রে সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে বারাদার দেশের জন্য তার সংগঠনের দাবি তুলে ধরেন, ‘আমরা চাই আফগানিস্তান স্বাধীন হোক, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেখতে চাই। একই সঙ্গে এখানে ইসলামী প্রথা চালু হতে হবে, যেখানে সব নাগরিক তথা আদিবাসী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোনও বৈষম্য থাকবে না।’

চার দশক ধরে আফগানিস্তানে চলা যুদ্ধে এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেসামরিক ১২ হাজার। এই সংঘাত নিরসনে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে শান্তি আলোচনা। নিউইয়র্কে নাইন ইলেভেনের হামলার ১৯তম বর্ষপূর্তির একদিন পর এই ঐতিহাসিক আলোচনায় অংশ নিলো আফগান সরকার ও তালেবান। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালায় মার্কিনিরা।