ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনা: ভারতে পাঠানো মেডিক‌্যাল সরঞ্জাম যাচ্ছে কোথায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৯, ৬ মে ২০২১   আপডেট: ১৯:৪৬, ৬ মে ২০২১
করোনা: ভারতে পাঠানো মেডিক‌্যাল সরঞ্জাম যাচ্ছে কোথায়?

গত মাসে ভারতে করোনা বিপর্যয় শুরু হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দিল্লিতে মেডিকেল সরঞ্জাম পাঠানো শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ বিমান বোঝাই করে গত সপ্তাহেও ভেন্টিলেটর, ওষুধ ও অক্সিজেন সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। গত রোববার পর্যন্ত দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ২৫টি ফ্লাইটে ৩০০ টন সরঞ্জাম এসেছে। 

তবে ভারতে সংক্রমণের হার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেও চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তারা পাচ্ছেন না। হাসপাতালগুলো যখন সরঞ্জামের জন্য বারবার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তখন কার্গোগুলো বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারগুলোতে পড়েছিল। প্রথম ব্যাচের সরঞ্জামগুলো পৌঁছার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর গত সোমবার এগুলো বিতরণ শুরু হয় বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অবশ্য ভারত সরকার সরঞ্জাম সরবরাহে বিলম্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে এক বিবৃতিতে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘সুসংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়’ এগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি,  তারা সাত দিনই ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন।

তবে করোনা সংক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোর মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এখনও কোনো মেডিকেল সরঞ্জাম পাননি।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে কেরালায় এক দিনে ৩৭ হাজার ১৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ভারতের যে কয়টি রাজ্যে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে অন্যতম কেরালা। বুধবার বিকেল পর্যন্ত এই রাজ্যের কর্মকর্তারা কোনো ধরনের মেডিকেল সরঞ্জাম পাননি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. রাজন খোবরাগাড়ে।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী প্রিনারিয়া বিজয়া খোলা চিঠিতে জরুরিভিত্তিতে তার রাজ্যে অক্সিজেন পাঠাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদেশ থেকে আসা সরঞ্জামগুলো কেরালায় বিতরণেরও অনুরোধ জানিয়েছেন।

কিছু স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দাবি করেছেন, মেডিকেল সরঞ্জামগুলো কখন আসবে বা সরবরাহ করা হবে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো যোগাযোগই করেনি।

ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সংগঠন হেলথ কেয়ার ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ড. হর্ষ মহাজন বলেন, ‘এগুলো কোথায় বিতরণ করা হয়েছে সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য নেই। মনে হচ্ছে লোকজন জানেই না। আমি দুই তিনটি জায়গায় চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কোনো খোঁজ পাইনি। এটা এখনও স্পষ্ট নয়।’

করোনা সংকট মোকাবিলায় কাজ করছে এমন কিছু বেসরকারি সংগঠনও মেডিকেল সরঞ্জাম নিয়ে তথ্য ঘাটতিতে হতাশা প্রকাশ করেছে।

অক্সফাম ইন্ডিয়ার পরিচালক পঙ্কজ আনন্দ বলেন, ‘ত্রাণগুলো কোথায় গেছে সে ব্যাপারে কারো কাছে স্পষ্টতা আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনাকে জবাব দেওয়ার মতো কোনো ওয়েবসাইটেই কোনো ট্র্যাকার নেই।’

ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়  জানিয়েছে, রাজ্যগুলোতে ত্রাণ বিতরণের জন্য সুসংগঠিত প্রক্রিয়া তৈরি করতে তাদের সাত দিন সময় লেগেছে। 

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ২৬ এপ্রিলে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং ত্রান বিতরণের ব্যাপারে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর ঘোষণা করা হয় ২ মে। তবে কখন থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় কিছুই জানায়নি। 
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়