ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনার ভয়ে সৎকারে আসেনি, শ্রাদ্ধে খেতে হাজির ১৫০ জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৩০ মে ২০২১  
করোনার ভয়ে সৎকারে আসেনি, শ্রাদ্ধে খেতে হাজির ১৫০ জন

চারদিনের ব্যবধানে বাবা মা দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। করোনায় মৃত্যু হওয়ায় সৎকারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।  সাহায্যের জন্য দরজায় দরজায় ঘুরলেও কেউ মুখ ফিরে তাকায়নি। শ্রাদ্ধের দিন উল্টো ছবি দেখে তাই ধাক্কা খেতে হয়েছে ভারতের বিহার রাজ্যের এক বাসিন্দাকে।

বিহারের অররিয়া জেলার বিষ্ণুপুরা গ্রামের বাসিন্দা সোনি নামের ওই তরুণী। বাড়িতে তার ১৪ বছরের ভাই নীতিশ আর ১২ বছরের বোন চাঁদনীও রয়েছে। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের বাবা মা দুজনেই। সেসময় মৃতদেহ সৎকারের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হয়েছিল এই অনাথ শিশুদের। সংক্রমণের ভয়ে কেউ সাহায্য করেননি। নিরুপায় হয়ে নিজেদের বাড়ির উঠানেই মায়ের মৃতদেহ কবর দিতে হয়েছে তিন ভাই বোনকে। কিন্তু তিন জনেই অবাক হয়েছে শ্রাদ্ধের দিন। কারণ দরকারের সময় যে চেনা মুখ গুলো ফিরেও তাকায়নি, বিনাপয়সায় খাবার খেতে তারা সবাই হাজির। ১৫০ জন আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশী উপস্থিত হয়েছিলেন শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে।

সোনির বাবা স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান চালাতেন। গ্রামের লোকজন তাকে ডাক্তার সাহেব ডাকতেন। যখন তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, পরিবারটিকে চিকিৎসার খরচ জোগানোর জন্য নিজেদের গরু ছাগলও বিক্রি করে দিতে হয়েছে পানির দরে। কারও থেকে এক কানাকড়ি সাহায্য আসেনি।

বাবাকে সুস্থ করার চেষ্টায় নিয়োজিত মাও সংক্রমিত হন করোনায়। ঋণে জর্জরিত পরিবার, আর কোনো চিকিৎসা চালানোর সামর্থ্য তাদের ছিল না। চার দিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় মায়েরও। বাড়ির উঠনে কবর দেওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা খুঁজে পায়নি তিন ভাইবোন। 

সোনি বলেন, ‘আমাদের তিন জনের কাছে আর কোনো উপায় ছিল না। আমাদের খাবারও ছিল না। বাবা মা দুজনেই চলে গেছে।’

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়