ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

আমূল বদলাচ্ছে সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ২০ জুন ২০২১   আপডেট: ১৭:৫৮, ২০ জুন ২০২১
আমূল বদলাচ্ছে সৌদি আরব

সৌদি আরবের পরিচয়ের একটি অংশ ছিল মসজিদের মাইকে উচ্চ আওয়াজে আজান দেওয়া। তবে সম্প্রতি মাইকের আওয়াজ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। দেশটির রক্ষণশীল ধর্মীয় পরিচয় মুছতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান একের পর এক যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন এটি ছিল তার সর্বশেষ।

সৌদি ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত মাসে ঘোষণা করে, মাইক সর্বোচ্চ যতটুকু জোরে বাজানো যায় তার এক তৃতীয়াংশ ভলিউমে আজান দিতে হবে। মূলত শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ রক্ষণশীলদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।  টুইটারে হ্যাশট্যাগ চালু করা হয়-‘আমরা মসজিদের মাইক ফেরত চাই।’ একই সঙ্গে দাবি জানানো হয়, রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলিতে উচ্চশব্দে যেন মিউজিক বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলোতে উচ্চশব্দে মিউজিক বাজানো একসময় সৌদি আরবে কল্পনাও করা যেতো না। তবে যুবরাজ সালমানের উদারনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে এটি এখন সাধারণ ব্যাপার। 

যুবরাজ  সালমানের আরেকটি উদ্যোগ হচ্ছে, ধর্মীয় পুলিশকে নিস্ক্রিয় করা। একসময় আজানের পর দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে তা নজরদারি করতো এই পুলিশ। তবে এখন সেই পুলিশ নেই, আর আজানের পর দোকান-পাটও খোলা থাকছে দেদারছে, যা এক সময় ছিল অকল্পনীয়।

একটা সময় সৌদিতে অন্যধর্মের চর্চা নিষিদ্ধ ছিল। তবে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, একটি গির্জা চালুর অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সৌদি শাসকদের কর্মতালিকায় রয়েছে। ইসলামে সুষ্পষ্টভাবে হারাম ঘোষিত মদের ওপর প্রকাশ্য নিষেধাজ্ঞা এখনও সৌদিতে আছে। তবে সৌদি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একটি উপসাগরীয় দেশের কূটনীতিকসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ধীরে ধীরে মদের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

আরব গালফ স্টেটস ইনিস্টিটিউট ইন ওয়াশিংটনের ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, ‘এটি বলা অতিরঞ্জিত নয় যে, সৌদি আরব ওয়াহাবি পরবর্তী যুগে প্রবেশ করেছে, যদিও দেশটিতে এখনও কঠোর ধর্মীয় বিধান বলবৎ রয়েছে। অবশ্য অর্থনীতি, সমাজজীবন ও পররাষ্ট্রনীতিতে ধর্মের আর কোনো ভেটো ক্ষমতা নেই।’

উপসাগরীয় দেশের এক কূটনীতিক বলেছেন, ‘অতীতে দেশটির পররাষ্ট্র নীতি ইসলামী মতবাদ দিয়ে পরিচালিত হতো- মুসলমানরা একটি দেহের মতো, যখন কোনো অঙ্গ আঘাত পায় হয় তখন সারাদেহ কষ্ট পায়। তবে এখন এর ভিত্তি পারস্পরিক অহস্তক্ষেপ নীতি : আমরা (সৌদি) কাশ্মির বা উইঘুর নিয়ে কথা বলব না, তোমরা খাশোগির ব্যাপারে কথা বলবে না।’
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়