ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ল্যাম্বডা’ কতটুকু ভয়ঙ্কর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ২৮ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৬:১৪, ২৮ জুলাই ২০২১
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ল্যাম্বডা’ কতটুকু ভয়ঙ্কর

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়ানোর পর সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি বহুবার নিজের রূপ পাল্টেছে। কিছু কিছু ভ্যারিয়েন্ট বেশ শক্তিশালী ও মারাত্মক বলেও প্রমাণিত হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ পর্যন্ত করোনার চারটি ভ্যারিয়েন্টকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা। এগুলো ছাড়াও করোনার আরও চারটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে - ইটা, আইয়োটা, কাপ্পা ও ল্যাম্বডা। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো গুরুতর সংক্রামক নয় বলে দাবি করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে বিগত কয়েক সপ্তাহে ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্টটি বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সর্বপ্রথম পেরুতে এই ধরনটির অস্তিস্ত্ব মেলে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৮টি দেশে এই ভ্যারিয়েন্টে মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আর্জেন্টিনা,  ব্রাজিল, কলাম্বিয়া, ইকুয়েডর, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স,পর্তুগাল,যুক্ত্ররাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য  অন্যতম। 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট উল্লেখযোগ্য হারে শনাক্ত হয়েছে। গত তিন মাসে পেরুর প্রায় ৮০ শতাংশ আক্রান্তের দেহে এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে। 

যদিও এটি প্রথম শনাক্তকারী ডা. পাবলো টিসুকায়ামা বলেন, ‘আমরা যখন এই ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করি তখন আমাদের কাছে এটি অতো গুরুত্বপূর্ন মনে হয়নি। তবে এটি হঠাৎ করে বেশি সংখ্যক মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। তাই আমরা প্রতিনিয়তই মানবদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করছি এবং পরীক্ষা চালাচ্ছি।’

পাবলো আরও বলেন, ‘প্রথমদিকে একে অন্যান্য সাধারণ ভ্যারিয়েন্টের মতই মনে হয়েছিল। ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে আমরা এটি বেশি দেখতে পেয়েছি। তবে চলতি বছরের মে মাসে চিলি ও পেরু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুরোধ জানায় এটিকে আলাদা ভ্যারিয়েন্ট গন্য করতে। তাই সংস্থাটি ল্যাম্বডাকে করোনার অন্যতম ধরণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
 
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট মানবদেহে সংক্রমণ ঘটিয়ে সেলগুলোকে নিস্ক্রিয় করে ফেলে। দেহের প্রোটিন স্পাইকে মিশে গিয়ে নিজেদের ধরণও পাল্টে ফেলতে পারে এটি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেহে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও কমিয়ে দিতে পারে। এটি অনেকটা ডেল্টা ভাইরাসের কাছাকাছি শ্রেণিভুক্ত। 

ইউনিভার্সিটি অব চিলির ভাইরোলজিস্ট রিকার্ডো সটো-রিফো বলেছেন, ‘সম্ভবত ডেল্টা ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পিছনে ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্টও কাজ করেছে। তবে আমরা নিশ্চিতভাবেই এটি বলতে পারছি না যে, এই ধরনটির আসলে একাই কতটুকু শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর। আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ভাইরাসের ধরণগুলো ক্রমাগত বদলাতে থাকায়, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন স্বাভাবিক উঠতেই পারে। তবে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নির্ভর করে এটি কারো শরীরে প্রবেশের পর কতটুকু অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম এবং মানবদেহের টি-সেল কতটা ভাল সাড়া দিচ্ছে। যদিও ভ্যাকসিনগুলো আবিস্কার করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে ছড়িয়ে পরা ভাইরাসকে গবেষণা, তবে তার মানে এই নয় যে সেগুলো যে কোনো ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম নয়।’

 

ঢাকা/সাব্বির

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়