ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সমুদ্র পথে শস্য রপ্তানিতে ইউক্রেন-রাশিয়া চুক্তি সই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ২৩ জুলাই ২০২২   আপডেট: ০৪:১০, ২৩ জুলাই ২০২২
সমুদ্র পথে শস্য রপ্তানিতে ইউক্রেন-রাশিয়া চুক্তি সই

কৃষ্ণ সাগরের বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি শুরুর জন্য চুক্তি সই করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেইন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চুক্তিটি পুরোপুরি কার্যকর হবে এবং শস্যের চালান যাওয়া শুরু হবে বলে আশা করছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার (২২ জুলাই) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এ চুক্তি সই হয়। বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন।

সংবাদ মাধ্যম জানায়, এই চুক্তির মেয়াদ ১২০ দিন। তবে আলোচনা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চুক্তির মেয়াদ আরো বাড়ানো যাবে। 

এদিকে তুরস্ক এবং জাতিসংঘের সহায়তায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে সই হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার পক্ষে চুক্তিতে সই করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই শোইগু। ইউক্রেনের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সে দেশের অবকাঠামো মন্ত্রী ওলেকসান্দার কুবরাকভ। এ সময় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্য বহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সেজন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হবে। সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে জাতিসংঘ, রাশিয়া, তুরস্ক ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।

চুক্তি সই করার আগে কিয়েভের পক্ষ থেকে মস্কোর সঙ্গে সরাসরি কোনো চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল।

জাতিসংঘের মহাসচিব রাশিয়া এবং ইউক্রেনের চুক্তির প্রশংসা করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্বকে ‘স্বস্তি’ দেবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, ‘আজ  একটি আশার আলো, একটি সম্ভাবনার আলো দেখতে পেলাম। এটি একটি স্বস্তির আলো যা এখন বেশি প্রয়োজন ছিল।' চুক্তিটি হওয়ার পেছনে তুরস্কের সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন, ‌এই চুক্তি কোটি কোটি মানুষকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া এটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমিয়ে দেবে।'

কৃষ্ণসাগরে পণ্যবাহী জাহাজ যাত্রা করার আগে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলোতে শস্য ভর্তির কাজ নিরীক্ষণ করবে তুরস্ক, ইউক্রেন, রাশিয়া ও জাতিসংঘের কর্মীরা। ইউক্রেনের বন্দরগুলোতে পেতে রাখা মাইন এড়াতে নাবিকেরা জাহাজ মানচিত্র ব্যবহার করে শস্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলো নিয়ে যাবে। জাহাজগুলো কৃষ্ণসাগর অতিক্রম করে তুরস্কের বসফরাস প্রণালির দিকে যাবে। জাতিসংঘ, ইউক্রেন, রাশিয়া ও তুরস্কের প্রতিনিধিরা ইস্তাম্বুলের একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র থেকে জাহাজ পর্যবেক্ষণ করবেন। 

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। এতে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে খাদ্য ও জ্বালানির দাম ব্যাপক মাত্রায় বাড়তে শুরু করে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেন, এই চুক্তির ফলে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের শস্য বিক্রির সুযোগ পাওয়া যাবে।

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, আরটি

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়