ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘তিন সপ্তাহের মধ্যে একশ করোনা রোগীর ওষুধ তৈরি করবো’

মুছা মল্লিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ১৪ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘তিন সপ্তাহের মধ্যে একশ করোনা রোগীর ওষুধ তৈরি করবো’

করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিরূপে দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় বিপাকে বিশ্ব। তবে থেমে নেই চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট গবেষকদের প্রচেষ্টা। মৃত্যুর এই মিছিল থামাতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই যাত্রায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় যেসব ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেই ওষুধ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে দেশীয় কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি। ইতোমধ্যে অনুমোদনও মিলেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের।

করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ওষুধ উৎপাদন, বাজারজাত প্রক্রিয়া, মাত্রা, পার্শ্ব-পতিক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের গ্লোবাল বিজনেস ডিরেক্টর মো. মঞ্জুরুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুছা মল্লিক।

রাইজিংবিডি: আমরা জানতে পেরেছি করোনার সম্ভাব্য ওষুধ এভিগ্যান সম্পর্কে। আমাদের প্রশ্ন হলো, এভিগ্যান ব্র্যান্ড নেম, না কি জেনেরিক নেম? এর কার্যকারিতা ঠিক কতটুকু হতে পারে?

মঞ্জুরুল আলম: এভিগ্যান মূলত জাপানের ফুজি কোম্পানির একটি ওষুধের ব্র্যান্ড নেম। যার জেনেরিক বা বৈজ্ঞানিক নাম হলো ফ্যাভিপিরাভির। ওষুধটি মূলত ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ফুজি তৈরি করেছিল। পরে চীন করোনা ঠেকাতে এটি প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছে।

রাইজিংবিডি: বিকন ফার্মা কি ফ্যাভিপিরাভির উৎপাদন করতে চলেছে?

মঞ্জুরুল আলম: হ্যাঁ। বাংলা নববর্ষে আমরা বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী।

রাইজিংবিডি: ওষুধটির বাজারজাতকরণ এবং মাত্রা কী হতে পারে?

মঞ্জুরুল আলম: আমরা প্রথমে একশ রোগীর জন্য এই ওষুধ বানাব। বাজারজাত করার আগে ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেব। প্রতিটি ওষুধ (200 mg) আকারে আসবে। আমরা এর বাণিজ্যিক নাম দিয়েছি ফ্যাভিপিরা- ২০০।

রাইজিংবিডি: কোন দেশ থেকে আপনারা ওষুধের উপকরণ আমদানি করছেন? বিদেশী কোনো কোম্পানি এই বিষয়ে সহযোগিতা করছে কিনা?

মঞ্জুরুল আলম: আমরা প্রধাণত চীন এবং জাপান থেকে এই ওষুধের কাঁচামাল আমদানি করছি। ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে দেখার জন্য চীন থেকে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্ট (API) এনেছি, তবে বিদেশী কোনো কোম্পানির সাহায্য ছাড়াই আমরা এগিয়ে চলেছি।

রাইজিংবিডি: কত দিনের মধ্যে বাজারজাত হবার সম্ভাবনা রয়েছে?

মঞ্জুরুল আলম: অনেকেই গত ১২ এপ্রিলের মধ্যে ওষুধ আসবে- এমন বলেছিলেন। এটি সঠিক নয়। আমরা আনুমানিক দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একশ করোনা রোগীর জন্য ওষুধ তৈরি করবো।

রাইজিংবিডি: ওষুধের ধরন এবং মাত্রা সম্পর্কে জানতে চাই?

মঞ্জুরুল আলম: ওষুধটি আসবে ট্যাবলেট আকারে। প্রতিটি ট্যাবলেটে থাকবে ২০০ মিলিগ্রাম ফ্যাভিপিরাভির। গর্ভবতী মা এবং ভ্রুণের উপর এই ওষুধের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

রাইজিংবিডি: প্রাথমিকভাবে কোন হাসপাতালের রোগীদের উপর এই ওষুধের পরীক্ষা চলবে?

মঞ্জুরুল আলম: আমরা প্রথমেই সরকার নির্দেশিত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং বিএসএমএমইউ-এর রোগীদের উপর পরীক্ষা চালাব।

রাইজিংবিডি: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীর কতদিন এ ওষুধ সেবন করতে হতে পারে?

মঞ্জুরুল আলম: স্বাভাবিকভাবে কিছু আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল অনুযায়ী, উহানে ৫-৭ দিন খাবার নির্দেশনা এসেছে। তবে রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে ৭-১০ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।

রাইজিংবিডি: ওষুধের সম্ভাব্য মূল্য কত হতে পারে এ সম্পর্কে জানতে চাই?

মঞ্জুরুল আলম: মূল্য সম্পর্কে বিশেষ কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে জনসাধারণ ওষুধ পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আপাতত আশার কথা হচ্ছে, ময়মনসিংহের ভালুকায় বিকন ফার্মার নিজস্ব ল্যাবে এই ওষুধের উৎপাদন প্রক্রিয়া চলছে।

 

ঢাকা/মারুফ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়