ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাগেরহাটে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা, অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ২৫ অক্টোবর ২০২০  
বাগেরহাটে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা, অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

ভারী বর্ষণে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। পানি কমতে শুরু করলেও হাসি নেই মৎস্যচাষিদের মুখে, ঘেরের মাছ বের হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে।

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) ভোর রাত থেকে শনিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণে এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের মৎস্য চাষী রবিউল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার টানা বৃষ্টিতে আমার মাছের ঘের তলিয়ে প্রায় ৭ লাখ  টাকার মাছ বের হয়ে গেছে।  শুধু আমার নয় আমার এলাকার বিভিন্ন মানুষের ঘের ও পুকুর ডুবে গেছে। অনেক মাছ চাষী-ই নিস্ব হয়ে গেছে দাবি করেন তিনি।

শরণখোলা উপজেলার গোলবানু, মহিবুন্নাহার, ছাহেরা বেগম, হাওয়া বেগম, শাহিনুর বেগম বলেন, বৃষ্টিতে থাকার ঘর, রান্না ঘর, গোয়াল ঘর সব ডুবে গেছে। দুইদিন ধরে দোকান থেকে চিরা, মুরি ও রুটি কিনে খেয়েছি। 

শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী সোহেল ফরাজী ও সোহবান শেখ বলেন, এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছিলাম। কিছুদিন পরে মাছ বিক্রি করার ইচ্ছে ছিল।  বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেল আমার। এখন কীভাবে চলবো জানি না।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, বৃষ্টির পানিতে উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি।  আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) ভোর রাত থেকে শনিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিতে বাগেরহাটের ৯ হাজার ৭৬১টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। এতে চাষীদের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সভাপতি মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, প্রত্যে দুর্যোগেই বাগেরহাটের মৎস্য চাষীদের অনেক ক্ষতি হয়। এবার বৃষ্টিতে বাগেরহাটের প্র্রায় ১৫ হাজার ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে।  চাষীদের ক্ষতি পোষাতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. খালেদ কনক বলেন, চাষীদের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা চাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এই ক্ষতি পোষাতে চাষীদের প্রশিক্ষণ ও সরকারি বিভিন্ন প্রনোদনার জন্য চেষ্টা করার কথা ব্যক্ত করেন তিনি।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, অতিবর্ষণের কারণে জেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।  কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে- আমরা সেই তালিকা প্রস্তুতের কাজ করছি।  দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিভিন্ন উপজেলায় পাঠিয়েছি। 

বাগেরহাট/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়