ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মহাকবির ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী

সাকিরুল কবীর রিটন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২১  
মহাকবির ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী

বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ।

উনবিংশ শতাব্দির এই বিশিষ্ট কবি ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত আর মা জাহ্নবী দেবী।

মহাকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে কবির জীবনীর ওপর আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠান শুরুর আগে মধুকবির আবক্ষে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হবে। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। 

তেরো বছর বয়সে মধুসূদন কলকাতায় আসেন। স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়ার পর তিনি তদনীন্তন হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। মধুসূদন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তাই অচিরেই কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি. এল. রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যপ্রীতি সঞ্চারিত করেছিলেন। আঠারো বছর বয়সেই মহাকবি হওয়ার ও বিলাতে যাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার মনে বদ্ধমূল হয়ে যায়।

১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। পরিচিত হন "মাইকেল মধুসূদন দত্ত" নামে। খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের পর মধুসূদন শিবপুরের বিশপস কলেজে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এখানে তিনি গ্রিক, লাতিন, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষা শিক্ষা করেন। বিশপস কলেজে অধ্যয়ন শেষ করে যখন কলকাতায় চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন মধুসূদন। তখন ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (চেন্নাই) চলে যান। পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন আকৃষ্ট হন নিজের মাতৃভাষার প্রতি। এই সময়েই তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্যরচনা করতে শুরু করেন।

মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হলো- দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী (নাটক), পদ্মাবতী (নাটক), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর বধ ইত্যাদি। 

মাইকেলের ব্যক্তিগত জীবন ছিল নাটকীয় এবং বেদনাঘন।  মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে কাটান।  অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন।  ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন অবস্থায় মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মৃত্যুবরণ করেন।  মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যু হয় এই মহাকবির। 

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে সীমিত পরিসরে আজ মধুকবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।  যথাযোগ্য মর্যাদায় জন্মবার্ষিকী উদযাপন করার লক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।  করোনার কারণে এ বছর মধুমেলা হবে না।

যশোর/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়