বিআইডব্লিউটিএ’র ৩ জনের অবৈধ সম্পদের খোঁজ
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সিবিএ’র সভাপতি আবুল হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার ও সহকারী নিরীক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য ও নানা ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে আর্জিত অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে পৃথক নোটিশ দেয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের সই করা পৃথক নোটিশ তাদের বর্তমান ঠিকানা বরাবর পাঠানো হয়েছে। যেখানে আগামী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই নোটিশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের নিজের, নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়। দুদকের উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন।
বিআইডব্লিউটিএ থেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি আবুল হোসেন প্রভাব খাটিয়ে তার জামাতার (মেয়ের স্বামী) নামে করা লাইসেন্সে (এআরটেল বিডি লিমিটেড) বিআইডব্লিউটিএ’তে রমরমা ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন। বিধি অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ’র কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী বা তাদের নিকটাত্মীয় এই সংস্থার লাভজনক কাজে যুক্ত হতে পারেন না। এছাড়া আবুল হোসেন প্রভাব খাটিয়ে আপন ছোট ভাই চল্লিশোর্ধ বয়সী মেহেদী হাসানকে অষ্টম শ্রেণি পাস দেখিয়ে বিআইডব্লিউটিতে মার্কম্যান পদে চাকরি দিয়েছেন। বিষয়টি জানাজনি হলে তাড়াহুড়ো করে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স সংশোধন করা হয়। তবে মেহেদীর এসএসসি পাসের সনদে দেখা যায়, তার বয়স চল্লিশের বেশি। গত আড়াই বছরে বিআইডব্লিউটিএ’এর প্রধান কার্যালয়, ড্রেজারসহ বিভিন্ন জলযান, নদীবন্দর ও শাখা কার্যালয়গুলোতে বিভিন্ন পদে ৪ শতাধিক কর্মচারী নিয়োগ হয়। এর মধ্যে অন্তত দেড়শ নিয়োগ দেয়া হয়েছে আবুল হোসেন ও সিবিএ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের তদবিরে।
সিবিএ সভাপতি আবুল হোসেন বিআইডব্লিউটিএ’র একজন পরিচালকের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৭-৭৪৩৭) ২০১৬ সালের জুলাই থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ব্যবহার করেছেন। যেখানে গাড়ির পেছনে প্রায় ৭ লাখ টাকার জ্বালানি এবং চালকের বেতন-ভাতা ৫ লাখ টাকা বহন করেছে কর্তৃপক্ষ। দুদক অভিযান চালিয়ে পিডিবির দুই সিবিএ নেতার দখলে থাকা দুটি গাড়ি উদ্ধারের পর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ আবুলের গাড়ি প্রত্যাহার করেছে। প্রায় একই রকম অভিযোগ রয়েছে নোটিশ দেয়া অপর দু’জনের বিরুদ্ধে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন