ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চাঁদার জন্য নিষ্ঠুর নির্যাতন করতো সম্রাটের বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদার জন্য নিষ্ঠুর নির্যাতন করতো সম্রাটের বাহিনী

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার ক্যাডার বাহিনী নিষ্ঠুর নির্যাতন করতো।  

অস্ত্র আইনের মামলায় সম্রাটকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এ রিমান্ড আবেদন করেন।     

অস্ত্র আইনের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায়ও সম্রাটকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন একই থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র)  মাহফুজুল হক ভূঞা। মাদক মামলায়  সম্রাটের সঙ্গে বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর যুবলীগের নেতা এনামুল হক আরমানের ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন করা হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর এ দুই আসামির গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আবেদন করা হয়। ওই দিন আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য ৯ অক্টোবর ধার্য করেন। কিন্তু ৯ অক্টোবর সম্রাট অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য ১৫ অক্টোবর শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত।

জানা গেছে, মঙ্গলবার গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আবেদনের শুনানি জন্য সকাল ১০টার আগেই সম্রাটকে কারাগার থেকে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করা হবে। পরে বেলা ১১টার দিকে এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ওই রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হবে।  

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ৬ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লা থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে আটক করা হয়। আটকের সময় আরমান মাদকাসক্ত থাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে জানান, কাকরাইল অফিসে আরো মাদকদ্রব্য ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ তার সহযোগীরা অবস্থান করছে। সেই সংবাদ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে বেলা ১টার দিকে কাকরাইল অফিসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ৫ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। রুম থেকে ২টি ইলেকট্রিক শক মেশিন ও ২টি লাঠি উদ্ধার করা হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে জব্দকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি সম্রাট। 

সম্রাটের বিরুদ্ধে কেউ ভিন্ন মত পোষণ করলে কিংবা কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার ক্যাডার বাহিনী ইলেকট্রিক শক ও লাঠি দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো বলে আবেদনে বলা হয়।

সেখানে আরো বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আরমান ক্যাসিনো সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং অবৈধ মাদকের যোগানদাতা। তারা পরস্পর যোগসাজসে ঘটনাস্থলে মাদক সংরক্ষণ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আসামিরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে মাদক, জুয়া ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।

মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং অস্ত্র-গুলির রহস্য উদ্ঘাটনে সম্রাট ও আরমানের রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

 

ঢাকা/মামুন খান/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়