ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

জোড়া খুন : তিন আসামি ফের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৪, ১১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জোড়া খুন : তিন আসামি ফের রিমান্ডে

রাজধানীর ধানমন্ডিতে গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) এবং গৃহকর্মী দিতি হত্যার মামলায় তিন আসামির ফের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আরেক আসামিকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া তিন আসামি হলেন- ইলেকট্রিশিয়ান বেলায়েত, বাড়ির ব্যবস্থাপক গাউসুল আজম প্রিন্স ও গৃহকর্মী আতিকুল হক বাচ্চু। নুরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. রবিউল আলম চার আসামিকে আদালতে হাজির করেন। তিন আসামির ফের সাত দিনের রিমান্ড এবং আরেক আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

বাদীপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তারা বলেন, মামলার বাদী ঢাকা বারের আইনজীবী। তার মা ও কাজের মেয়েকে ছুরি দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ মামলার আরেক আসামি সুরভীর পক্ষে দুজন মানুষকে একার পক্ষে একই সময়ে হত্যা করা সম্ভব নয়। কারা সুরভীকে সাহায্য করেছে এবং তাকে বাসায় এনেছে তা জানার জন্য রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

শুনানিতে আসামি বেলায়েতের আইনজীবী বলেন, এটি একটি নির্মম, দুঃখজনক ঘটনা। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখেছি, সুরভীকে বাইরে বের হতে না দেয়ায় সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ঘটনার সময় বেলায়েত নামাজ পড়তে গিয়েছিল। এসে দেখে, এ ঘটনা ঘটে গেছে। তাছাড়া, তাকে আগে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ডে তেমন কিছু পায়নি। এখন রিমান্ডে নেয়া মানে টর্চার করা। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

বাচ্চুর আইনজীবী বলেন, সুরভী এ ঘটনা ঘটিয়ে ভেগে যায়। বাচ্চু বাইরে ছিলেন। হয়রানি করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

প্রিন্সের আইনজীবী বলেন, এ আসামি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাকে আগে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তেমন কিছু পায়নি। এখন রিমান্ডের প্রয়োজন নেই।

তারা বলেন, আমরা সবাই বিচার চাই। তবে নিরীহ লোক যেন হয়রানির শিকার না হয়।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

আসামিদের রিমান্ড এবং কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো. আশরাফ।

গত ৫ নভেম্বর চার আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন গৃহকর্মী মোছা. সুরভী আক্তার নাহিদার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড চলাকালে ৭ নভেম্বর সুরভী দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় ধানমন্ডির ২৮ নম্বর রোডে আফরোজা বেগমের মেয়ে অ‌্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবির ফ্ল্যাটে নতুন কাজের লোক সুরভীকে নিয়ে আসেন পুরনো কাজের লোক আতিকুল হক বাচ্চু।

আফরোজা বেগম এবং তার মেয়ে দিলরুবা সুলতানা রুবি পাশাপাশি বসবাস করেন। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে দিলরুবা ওই কাজের মেয়েকে তার মায়ের ফ্ল্যাটে কাজের জন্য পাঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দিলরুবা তার মাকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য দিলরুবা তার বাসার কাজের ছেলে রিয়াজকে মায়ের ফ্ল্যাটে পাঠান। রিয়াজ সেখানে গিয়ে কলিং বেল চাপেন এবং ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিলে তা খোলা দেখতে পান। রিয়াজ আফরোজা বেগমকে ডাইনিং রুমের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে দৌড়ে গিয়ে দিলরুবাকে জানান। দিলরুবা বাসার ভেতরে গিয়ে দেখতে পান যে, ডাইনিং রুমের মেঝেতে আফরোজা বেগম পড়ে আছেন এবং পাশের গেস্টরুমে পুরনো কাজের মেয়ে দিতির রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে।

জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত আফরোজা বেগমের মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবি ৩ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন।


ঢাকা/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়