ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সিপিবির সমাবেশে হামলা

১৯ বছর পর রায়, সর্বোচ্চ সাজা দাবি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১৯ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১৯ বছর পর রায়, সর্বোচ্চ সাজা দাবি

ফাইল ফটো

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা মামলার কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। আগামীকাল ২০ জানুয়ারি হামলার বর্ষপূর্তির দিনে রায় ঘোষণা হবে।

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করবেন। গত বছর ১ ডিসেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ তারিখ ঠিক করা হয়।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ১৯ বছর পর অবশেষে মামলাটির রায় হতে যাচ্ছে। আশা করছি, প্রকৃত অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। সাথে সাথে হামলার পেছনের ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত করতে হবে। ইন্ধনদাতাদের চিহ্নিত না করায় পরবর্তীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কাজে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু বলেন, সাক্ষী এবং আসামিদের গরহাজিরের কারণে মামলাটির বিচাকাজ বিলম্বিত হয়েছিল। অবশেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে চলে এসেছে। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। ভুক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচার পাবেন।

রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা সম্পর্কে আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ পত‌্যাশা করি, পলাতক এবং আটক সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, মামলাটিতে প্রথম চূড়ান্ত প্রতিবেদন হয়েছিল। পরবর্তীতে আবার তদন্তে গিয়ে চার্জশিট হয়। মামলার ১৪ জন আসামির মধ্যে একজনের কথিত একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রয়েছে। অন্য কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নেই। তাই শুধু ওই একজনের স্বীকারোক্তি দিয়ে আসামিদের দণ্ড  হওয়ার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলায় ৫ জন নিহত হয়। ২০ জন আহত হয়। নিহতরা হলেন- খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুটমিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মুক্তার হোসেন, খুলনার বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস।

ওই ঘটনায় সিপিবির তৎকালীন সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে  আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল। এরপর ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের আগস্টে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা হয়। এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবার পুনঃতদন্তের আদেশ দেয়া হয়। পুনঃতদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্ব আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃনাল কান্তি সাহা। পরের বছর ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।

মামলায় ১৩ আসামি হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মুফতি মাঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মো. মশিউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও নুর ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে আবদুল হান্নানের ব্রিটিশ হাইকমিশনার হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তাকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। অপর আসামিদের মধ্যে শওকত ওসমান, সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান সুমন ও মঈন উদ্দিন কারাগারে আছেন। কারাগারে থাকা আসামিরা সবাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি এবং ওই মামলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

 

ঢাকা/মামুন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়