‘ঘরে বসে প্রভাবিত হয়ে চার্জশিট তৈরি করেছেন তদন্ত কর্তা’
‘রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দুই বাসের রেষারেষিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেনের মৃত্যুর মামলায় তদন্ত কর্তা ঘরে বসে আসামিদের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে চার্জশিট তৈরি করেছেন।’
বুধবার (১১ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী আদালতে পুলিশ যে চার্জশিট দিয়েছে তার বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করেছেন রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম। নারাজির আবেদনে এমনটাই উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্টে) পক্ষ থেকে রাজীবের পরিবারকে সহায়তাকারী আইনজীবী প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস, মশিউর রহমান। আদালত নারাজির বিষয়ে শুনানির তারিখ আগামী ১ এপ্রিল (বুধবার) ধার্য করেন।
নারাজির আবেদনে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিস আলী মামলার ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত না করে রাজীবের আত্মীয়, পরিবার ও স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ না করে হাইকোর্টের আদেশে গঠন করা তদন্ত টিমের প্রতিবেদন, পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ না করে ঘরে বসে আসামিদের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে চার্জশিট দাখিল করেছেন। রাজীবের এজাহার তার চাচা জাহির হোসেন থানায় নিয়ে যান। এজাহারে তার নাম রয়েছে। তাকে সাক্ষী করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা তাকে চার্জশিটে সাক্ষী করেননি। ঘটনার পর রাজীবের সঙ্গে দুর্ঘটনা সম্পর্কে কথা বলেছিলেন তার খালা খাদিজা বেগম লিপি। তাকেও সাক্ষী করা হয়নি।
রাজীবকে শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আলাউদ্দিন হাছান, রাজীবের ভাই মেহেদী হাসান (বাপ্পী), মামা জাহিদুল ইসলাম, খালা জাহানারা বেগমকে সাক্ষীর তালিকায় রাখা হলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ না করে তদন্ত কর্মকর্তা মনগড়া তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছেন বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, দুই বাস চালকের দুষ্টু অভিপ্রায় না থাকলেও অপরাধমূলক জ্ঞান বিদ্যমান ছিল। দুই বাস চালকই জানতেন তাদের রেষারেষি ও পাল্লাপাল্লিতে কেউ আহত বা নিহত হতে পারে। অথচ তদন্ত কর্তা আসামিদের গুরুপাপে লঘুদণ্ড দেওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে এ ধরনের স্বল্পমাত্রার শাস্তির ধারা চার্জশিটে সংযোজন করেছেন।
এ অবস্থায় নারাজি আবেদন গ্রহণ করে চার্জশিটটিতে দণ্ডবিধির ৩০৪ (খ) এর স্থলে ৩০৪ ধারাসহ সমীচীন প্রাসঙ্গিক ধারা প্রতিস্থাপিত করে, বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এ আদালতকে নিজে সাক্ষ্য নিয়ে প্রয়োজনীয় সাক্ষীদের অর্ন্তভুক্ত করে অথবা অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অন্য কোনো সংস্থাকে মামলাটি তদন্তের প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বিআরটিসি বাসের চালক ওয়াহিদ ও স্বজন বাসের চালক খোরশেদকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ২৭৯/৩০৪(খ) ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজা হতে পারে।
ঢাকা/মামুন খান/জনি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন