সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের দাবি
সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নিহতের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর দুই সন্তান। শুক্রবার (১৩ মার্চ) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়নের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।
হাসান আলী চৌধুরীর সন্তান চৌধুরী দিলাবিজ মাহমুদ ও চৌধুরী মাহি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার বাবা-মা জড়িত নন, তারা নির্দোষ। ৩০ বছরের পুরনো মামলার তদন্ত কীভাবে মাত্র ৮ দিনে সমাধান সম্ভব? সাজানো নাটক দিয়ে আমার বাবা-মাকে জেল হাজতে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। না কি অন্য কোনো রহস্য আছে এর মধ্যে?’ তারা বলেন, ‘৩০ বছর পর পিবিআইয়ের স্কেচ করা মামলার চতুর্থ আসামি মারুফ রেজার ছবি দেখে চিনে ফেলা, মিথ্যা চিরকুটের প্রমাণ দিতে না পারা, ৩০ বছর আগে বাদীর জবানবন্দির সঙ্গে বর্তমান জবানবন্দির মিল না থাকা প্রমাণ করে মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি।’
নিজেদের বাবা-মাকে নির্দোষ দাবি করে চৌধুরী দিলাবিজ মাহমুদ ও চৌধুরী মাহি আরও বলেন, ‘বাদী অন্য কাউকে দিয়ে সগিরা মোর্শেদকে খুন করিয়েছেন, নাকি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে, না তৃতীয় কোনো পক্ষ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য মামলাটি পুনরায় তদন্ত প্রয়োজন। পুনরায় সুষ্ঠুভাবে মামলাটি তদন্ত করে আসল খুনিকে বের করা হোক।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকেলে সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার স্বামী সালাম চৌধুরী। প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দু’জনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এ আদেশের রিুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন।
পরের বছরের ২৭ আগস্ট অন্য এক আদেশে হাইকোর্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এরপর ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মামলার অধিকতর তন্ত আদেশে ইতোপূর্বে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
গত বছরের ১৭ আগস্ট এ মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। গত ১৫ জানুয়ারি চারজনকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই-এর পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়, তারা হলেন সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিন, শাহিনের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান ও মারুফ রেজা।
ঢাকা/মামুন খান/হক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন