ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যার পুরস্কার হিসেবে যা পেয়েছিলেন মাজেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৪, ৮ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধু হত্যার পুরস্কার হিসেবে যা পেয়েছিলেন মাজেদ

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পুরস্কার হিসেবে পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি হয়েছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদ।

বুধবার (০৮ এপ্রিল) বেলা দেড়টার দিকে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এর আগে বিচারক আসামি আবদুল মাজেদের বক্তব্যও শোনেন।

বক্তব্যে মাজেদ এ পুরস্কারের কথা আদালতকে জানান বলে সাংবাদিকদের তথ্যটি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল।

এদিকে মৃত্যু পরোয়ানা আদালত থেকে প্রস্তুত হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উজ্জল বিশ্বাস আদালতের সেরেস্তার কর্মচারী অমল কৃষ্ণকে নিয়ে লালসালুতে অবৃত ওই পরোয়ানা ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেন। আবদুল মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ পাওয়ার পর জেল কোডের বিধান অনুযায়ী ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ব্যবস্থা নেবেন।

এর আগে মঙ্গলবার (০৭ এপ্রিল) ঢাকা সিএমএম আদালতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি আবদুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে পাঠানোর ওই আদেশ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারিক আদালত ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত পান বুধবার।  যা পাওয়ার পর আদালতটি করোনাভাইরাসজনিত কারণে ছুটিতে থাকায় এদিনই এ বিষয়ে তারা হাইকোর্টের দিক নির্দেশনা চেয়ে পত্র পাঠান।  হাইকোর্ট ওই পত্র পাওয়ার পর ঢাকার জেলা ও দায়রা জজের ছুটি প্রত্যাহার করে আসামি আবদুল মাজেদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আদেশ দেন।

ওই আদেশ আসার পর ঢাকা জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার আব্দুল মান্নান, মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আসামি আবদুল মাজেদকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনসহ তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানির পর প্রথমে আদালত আসামি আবদুল মাজেদকে বুধবারই কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী এদিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে আবদুল মাজেদকে কারাগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে হাজির করেন। এরপর তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান আদালত। এ পর্যায়ে মৃত্যু পরোয়ানা জারির বিষয়ে প্রসিকিউটররা শুনানি করেন। শুনানির সময় বিচারক আসামি আবদুল মাজেদের বক্তব্যও শোনেন বলে জানা যায়। এরপরই মৃত্যুর পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়ার পর প্রসিকিউটর কাজল সাংবাদিকদের জানান, ‘আদালত মাজেদের বিষয়ে আমাদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আবেদন মঞ্জুর করেছেন।  এখন কারা কর্তৃপক্ষ জেল কোডের বিধান অনুযায়ী ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত আদেশ দেওয়ার আগে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেখানে আসামি বলেছে, তিনি পলাতক ছিলেন।  ঘটনার দিন (১৯৭৫ সালে) তিনি ক্যাপ্টেন খায়রুলের সঙ্গে ডিউটিতে ছিল।  বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পুরস্কার হিসেবে পরবর্তীতে তিনি ফিন্যান্স মিনিস্ট্রির ডেপুটি সেক্রেটারি হয়েছিল বলেও জানিয়েছে।  ১৯৯৬ সালে এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে সে (মাজেদ) পলাতক হয় বলেও আদালতে জানিয়েছেন।’

তবে আদালতের বুধবারের কার্যক্রম চলার সময় কোনো সাংবাদিককে আদালত কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।




ঢাকা/মামুন/জেডআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়