ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৪৬ বছর আগের হত্যা মামলা হাইকোর্টে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৪৬ বছর আগের হত্যা মামলা হাইকোর্টে

৪৬ বছর আগে, ১৯৭৩ সালে গোপালগঞ্জে চার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা বাতিল চেয়ে মামলার আসামি মোহন সরদার হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।

সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এ কারণে ওই আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাবিবুল ইসলাম ভুইয়া ও আতিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ ও শাহিন আহমেদ খান।

গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। এ অবস্থায় মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি মোহন সরদার।  আবেদনটি শুনানির জন্য বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হয়। আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত বলেন, এটা অবকাশকালীন বেঞ্চ। এ ধরনের আবেদন নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হওয়া দরকার। তাই আমরা শুনব না। নিয়মিত বেঞ্চে যান। এরপর আদালত মামলাটি বাতিলের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেন।

জানা যায়, ১৯৭৩ সালের ১০ মার্চ প্রতিপক্ষ পাঁচ মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান লেবু ওরফে সেলিম, কমলেশ বেদজ্ঞ, বিষ্ণুপদ, মানিক ও শেখ লুৎফুর রহমানকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর পিটিয়ে হত্যা করে লেবু ওরফে সেলিম, কমলেশ বেদজ্ঞ, বিষ্ণুপদ ও মানিককে। এছাড়া শেখ লুৎফুর রহমানকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যান তিনি। হাসপাতালেই পুলিশ লুৎফর রহমানের জবানবন্দি গ্রহণ করে। যা মৃত্যুকালীন জবানবন্দি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এই জবানবন্দিকেই পরদিন ১১ মার্চ মামলার এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ। এ কারণে তাকে মামলার বাদি হিসেবে ধরা হয়। পুলিশ তদন্ত শেষে অতি দ্রুত একই বছরের ২৫ মে ২৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত সংস্থা। মামলায় ২০০০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত একজনেরও সাক্ষ্যগ্রহণ করা যায়নি। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই হাইকোর্ট এক রায়ে মামলাটির বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় গোপালগঞ্জ আদালত ৪ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করে। কিন্তু গতকাল নির্ধারিত দিনে মামলার বাদীসহ কোনো সাক্ষীই আদালতে হাজির হননি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বাদীসহ জীবিত সাক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই মামলার ২৪ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি হেমায়েত উদ্দিনসহ ১৫ জন আসামি এরই মধ্যে মারা গেছেন। বেঁচে আছে মাত্র ৯ জন। আর এই মামলার ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে মামলার বাদীসহ মাত্র চারজন জীবিত রয়েছেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মেহেদী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়