ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আকাশ-জলপথে হয় মানবপাচার

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ২৬ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
আকাশ-জলপথে হয় মানবপাচার

আকাশ ও জলপথে মানবপাচার করা হয়। মিশর, দুবাই ও বাংলাদেশ বসে পাচার কর্মকাণ্ড সমন্বয় করেন মূল হোতারা। তারা বিদেশেও বিপুল পরিমাণ টাকাও পাচার করেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

সম্প্রতি লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার পর মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

তদন্তে জানা গেছে, লিবিয়ার বেনগাজিতে বাংলাদেশিরা পরিচালনা করছে ১৫টির মতো ‘নির্যাতন’ ক্যাম্প। এসব ক্যাম্পের মূল হোতা নোয়াখালীর কাজী ইসমাইল আলম, সিলেটের আশরাফুল আলম, কুমিল্লার শরিফ, মাদারীপুরের কালাম, কিশোরগঞ্জের মালেক, শরীয়তপুরের বারেক। এই দলে লিবিয়া, মিশর, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরো কয়েকটি দেশের দালাল আছে। তারা ঢাকা-দুবাই ভিজিট ভিসায় বাংলাদেশিদের লিবিয়ায় নিয়ে যায়। ব্যবহার হয় চারটি পথ। দালালরা লিবিয়া থেকে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে কাঠের নৌকা, ফাইবার ও হাওয়ার বোট ব্যবহার করছে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে তাদের দুবাইয়ে নেওয়ার লোভ দেখানো হয়। পরে নিজস্ব সোর্স কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হয়, দেশটিতে ভিজিট ভিসায় যাওয়া যাবে। এজন্য সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা খরচ লাগবে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষরা সম্পদ বিক্রি করে বা আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে কিংবা ঋণ নিয়ে টাকা নিয়ে দালালদের হাতে তুলে দেয়। এর পর বিদেশে নেওয়ার নামে শুরু হয় নির্যাতন।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা, মাদারীপুর কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানবপাচারের অভিযোগে শুক্রবার পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দালালরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, বিদেশ যেতে ইচ্ছুক সহজ-সরল মানুষগুলোই তাদের প্রধান টার্গেট। তাদের প্রথমে নেওয়া হয় দুবাই। এরপর মানুষগুলোকে সেখানে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে তাদের লিবিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

শুক্রবার (২৬ জুন) দুপুরে এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন,
‘গ্রেপ্তারকৃতদের বিভিন্ন সময় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা সবাই স্বীকার করেছে মানবপাচারের কথা। কিন্তু মূল হোতাগুলো দেশের বাইরে কিংবা বিদেশে অবস্থান করছে। ওসব দেশের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি। পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সকেও জানানো হয়েছে।’

অন্যদিকে, মানবপাচারকারীরা বিদেশে কী পরিমাণ টাকা পাচার করেছে তার তদন্তে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, মানবপাচারে জড়িত এসব মাফিয়ার দৌরাত্ম মিশর, দুবাই ও বাংলাদেশে। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করে তারা। দেশে ও বিদেশে কার কোন অ্যাকাউন্ট আছে, এসব অ্যাকাউন্টে কোন সময় কী পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে, তার একটি তালিকা করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এসব তালিকা ধরে ওসব দেশে চিঠি দেওয়া হবে।


ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়