ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঈদ ও আগস্টকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার শঙ্কা, ঢাকায় নিরাপত্তা বলয়

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৩০ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ঈদ ও আগস্টকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার শঙ্কা, ঢাকায় নিরাপত্তা বলয়

পুলিশের সতর্ক অবস্থান (ফাইল ফটো)

কোরবানির ঈদ ও শোকাবহ আগস্টকে সামনে রেখে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে পুলিশের সব ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বড় ধরনের নাশকতার সক্ষমতা জঙ্গিদের নেই। তারপরও আমরা সতর্ক আছি। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, গাড়ি, তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুলশান ও বারিধারার সব দূতাবাস এবং সংলগ্ন সড়কে থাকছে বাড়তি গোয়েন্দা নজরদারি।

গুলশান জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘কূটনৈতিকপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রয়োজনে পরিচয় দেখে লোকজনকে ভেতরে প্রবেশ বা বের হতে হবে।’

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বিমানবন্দর, পুলিশের স্থাপনা, দূতাবাস এবং সব উপাসনালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সারা দেশের পুলিশের ইউনিটগুলোকে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহর ও শহরতলি এলাকার ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মাদরাসা ও এতিমখানার ওপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) দেশে এমন অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের আদলে গঠন করা নব্য জেএমবির সদস্যরা হত্যাকাণ্ড, নাশকতা ও ধ্বংসাত্মকমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ জঙ্গিসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

সকাল ৬টা থেকে ৮টা এবং সন্ধ্যা ৭ থেকে ১০টা-এই সময়টিকে জঙ্গি হামলার জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চিঠিতে। সেখানে বলা হয়েছে, পুলিশ সদস্য, পুলিশের স্থাপনা, পুলিশের যানবাহন, বিমানবন্দর, দূতাবাস, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মিয়ানমারের মিশন এবং শিয়া, আহমাদিয়া মসজিদ, মাজার, মাজারকেন্দ্রীক মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডা হতে পারে জঙ্গি হামলার লক্ষ্যবস্তু।

পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, সম্ভাব্য হামলাকারী হতে পারে ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দাড়ি-গোঁফহীন কোনো তরুণ। তার পরনে থাকতে পারে প্যান্ট, শার্ট, টি শার্ট, কেডস এবং মাস্ক ও ক্যাপের পাশপাশি ব্যাকপ্যাকও থাকতে পারে তার সঙ্গে।

এদিকে, প্রতি বছরই ঈদকে সামনে রেখে অপরাধ তুলনামূলক বেড়ে যায়। ঈদের ছুটিতে সবাই গ্রামে চলে গেলে ফাঁকা ঢাকায় অপরাধ সংঘটিত হয়। বিশেষ করে পশুর হাট এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মলম, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি ঈদুল আজহার সময় পশুর হাটে চাঁদাবাজসহ বেশকিছু অপরাধী চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ঈদের আগে-পরে নিরাপত্তা শঙ্কা দেখা দেয়। এবার ঈদ মৌসুমে রাজধানীসহ সারা দেশে এ অপরাধীদের ঠেকাতে সাদা পোশাকে এবং ভার্চুয়ালি নজরদারি বাড়ানোসহ নানা পদক্ষেপ ও বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কন্ট্রোল রুম, থানা কিংবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর সহযোগিতা নিতেও নাগরিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

 

মাকসুদ/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়