ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যা বললেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২০, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যা বললেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

দুদক কার্যালয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ

মাস্ক-পিপিই কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন একটি দল।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিজের পক্ষে লিখিত বক্তব্য ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আবুল কালাম আজাদ। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘আপনারা সকলেই জানেন, ২০১৬ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। আমি লক্ষ করছিলাম যে, আমাকে নিয়ে অপপ্রচারের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। পদ আগলে রাখা আমার কাছে সম্মানের বিষয় নয়। তাই বিবেকতাড়িত হয়ে গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করি।’

তিনি বলেন, ‘সিএমএসডি কর্তৃক করোনা মোকাবিলার সরঞ্জাম ক্রয় সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় দুদক অনুসন্ধান করছে। সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে এ বিষয়ে আমি কী জানি, তা শোনার জন্য দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা আজ আমাকে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি যা জানি তা তাদের বিস্তারিত বলেছি। তদন্তাধীন বিষয় সম্পর্কে এই মুহূর্তে আমার পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু আপনাদের বলা সম্ভব নয়।’

নিজেকে সৎ ও দক্ষ দাবি করে সাবেক ওই স্বাস্থ‌্য কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি একটি কথা বলে শেষ করতে চাই যে, আমি কঠোর পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, সৎ, দক্ষ, সফল ও মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে সারা জীবন কাজ করেছি। আমি অহমিকামুক্ত সরল এবং সজ্জন ব্যক্তি। জনস্বাস্থ‌্য ব্যবস্থাপনার সকল ক্ষেত্রে আমার পর্যাপ্ত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতা আছে। কোভিডের মতো মহাদুর্যোগে যাতে লাখ লাখ মানুষের জীবনহানি না ঘটে, সেজন্য আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিবেকবোধ ও সদিচ্ছা থেকে নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে কাজ করেছি। কোভিড থেকে নিজেও রক্ষা পাইনি। ২০ দিন ধরে করোনায় ভুগে মৃত্যুর দুয়ার থেকে পরম করুণাময়ের অনুগ্রহে এবং চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুস্থ হয়েছি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরদিনই কাজে যোগ দিয়েছি। কারণ, কোভিড এমন একটি মহাদুর্যোগ যে বিশ্রামের কথা ভাবতে পরিনি। যে চিকিৎসকগণ আমার জীবন বাঁচিয়েছেন এবং আপনারাসহ আমার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী যারা দায়িত্ব পালন এবং কোভিড মোকাবিলায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের সবার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমার জন্য দোয়া করবেন।’

তিনি বলেন, ‘একটি কথা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক, এটা আমি চাই। এ বিষয়ে দুদকের তদন্তে আমি প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করব।’ এরপর তিনি সাংবাদিকদের আর কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে যান।

গত ৬ আগস্ট ডা. আবুল কালাম আজাদকে তলবি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিশ বিশেষ বাহক মারফত তার বানানীর ৫ নম্বর রোডের বাসায় পাঠানো হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সিএমএসডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য সরঞ্জামা ক্রয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ১০ জুন তদন্ত শুরু করে দুদক।

ঢাকা/এম এ রহমান/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়