ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

এসআর গ্রুপের ২৬.৪৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০  
এসআর গ্রুপের ২৬.৪৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

রাজধানীর এসআর গ্রুপের দুই রেস্টুরেন্টে ২৬.৪৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ফুড ভিলেজ লিমিটেড ও একই মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে ফুডভিলেজ প্লাস নামের তাদের দুই প্রতিষ্ঠান ২০১৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত তিন বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিক্রয়ের তথ্য গোপন করেছে। 

রাজধানীর উত্তরায় নিকুঞ্জ-১ এলাকার এসআর গ্রুপের হেডঅফিসে অভিযান চালিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভ্যাট গোয়েন্দা এসআর গ্রুপে অভিযান চালিয়ে গ্রুপের মালিকানাধীন দুটি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের প্রকৃত বিক্রয় গোপনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার দল নিকুঞ্জ-১ এলাকায় তাদের হেডঅফিসে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক হিসাবপত্র জব্দ করে।’ 

তিনি বলেন, ‘জব্দকৃত সেসব কাগজপত্র যাচাই করে ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পায়- উত্তরবঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দুটি হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছে। দুটো রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় গোপন করা হয়েছে মোট ১৯৮.৬৩ কোটি টাকা। ভ্যাট রিটার্নে এসআর গ্রুপ প্রায় ৭২% তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। দুই রেস্টুরেন্ট ২৬.৪৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।’ 

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ ভ্যাট সার্কেল থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে জুলাই ২০২০ পর্যন্ত তিন বছর ছয় মাসে ফুড ভিলেজ প্লাস রেস্টুরেন্টে বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ২৩.০১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে ২.৫২ কোটি টাকা। 

কিন্তু জব্দকৃত কাগজে দেখা যায় প্রকৃত বিক্রয়ের পরিমাণ ১২৩.৩০ কোটি টাকা। ফুড ভিলেজ প্লাস এই সময়ে বিক্রয় গোপন করেছে ১০০ কোটি টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৯.৪৪ কোটি টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে ৪.০৭ কোটি টাকা সুদ হয়।

অন্যদিকে একই মালিকানাধীন ফুড ভিলেজ লিমিটেড ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত তিন বছর পাঁচ মাসে মাসিক ভ্যাট রিটার্নে বিক্রয় দেখানো হয়েছে ২৩.৮৮ কোটি টাকা। এতে ভ্যাট দেওয়া হয়েছে ২.৫১ কোটি টাকা। তবে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে এই সময়ে ফুড ভিলেজ লিমিটেডের প্রকৃত বিক্রয় ১২২.২২ কোটি টাকা পাওয়া যায়। এই তথ্য গোপন করায় ফুড ভিলেজ লিমিটেড কর্তৃক ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৮.৯৩ কোটি টাকা। আরোপযোগ্য সুদ ৩.৯৯ কোটি টাকা। 

রেস্টুরেন্ট দুটো মূলত ঢাকা-রংপুর হাইওয়েতে বাসের যাত্রীদের খাবার পরিবেশন করে। এতে নন-এসি, এসি ডিলাক্সে খাবার বিক্রয় এবং একটি কর্নারে মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় পণ্য বিক্রি করা হয়। 

ওই অভিযানে উক্ত দুটি রেস্টুরেন্ট ছাড়াও দি গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি, সুং ফুড গার্ডেন, এসআর ট্রাভেল ও পার্সেলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রও আটক করা হয়। এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে আড়াআডি় যাচাই করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। 

অভিযানটি পরিচালনা করেন সংস্থার উপপরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুব।

ঢাকা/এম এ রহমান/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়