ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ওসিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সম্পাদকের মামলা আবার তদন্তে পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০০, ২৫ অক্টোবর ২০২০  
ওসিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সম্পাদকের মামলা আবার তদন্তে পিবিআই

স্থানীয় একটি মাসিক পত্রিকার সম্পাদক অপহরণকারীদের আটক করেও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আট জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আবারও তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) । 

গত ২০ অক্টোবর ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কামরুন্নাহার পিবিআইকে পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়েছেন। রোববার (২৫ অক্টোবর) মামলার বাদীর আইনজীবী আজাদ রহমান জানিয়েছেন।

এর আগে গত গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘মানবাধিকার খবর’ নামক মাসিক পত্রিকার এক সম্পাদক মানবাধিকার কর্মী রিয়াজ উদ্দিন নিজেই বাদী হয়ে এ মামলা করেন। সাভার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এফএম শাহেদ হোসেনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন তিনি। ওইদিন একই আদালত মামলাটি ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। যার তদন্ত শেষে গত ২৬ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাসিম মিয়া আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বাদীকেই তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্টো দোষারোপ করে ‘আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়নি’ মর্মে উল্লেখ করেন। ফলে বাদী প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুনানি হয়। এরপর বাদীর নারাজির যৌক্তিকতা থাকায় গত ২০ অক্টোবর আদালত পিবিআইকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন সাভার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকারিয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলি এবং সাভার থানাধীন ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক, অপহরণকারী বৃষ্টি, তার স্বামী শুধাংশ রায়, নয়ন কুমার ও রণিসহ অজ্ঞাতনামা আর ৫/৬ জন।  

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর সঙ্গে গত বছর ডিসেম্বরে আসামি বৃষ্টির ফেসবুকে পরিচয়। তিনি বাদীকে একটি ছেলেসহ বিভিন্ন অসহায়ত্বের কথা বলেন। বাদী মানবাধিকার কর্মী হওয়ায় তার কাছে সহায়তা চান এবং সরেজমিনে অসহায়ত্ব দেখে প্রতিবেদন প্রকাশের অনুরোধ করেন। বাদী সরল বিশ্বাসে আসামি বৃষ্টির কথায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাভার বাসস্ট্যান্ড হয়ে হেমায়েতপুরের বালুর মাঠের সোহরাব হোসেনের বাড়িতে দুপুর ১টার দিকে যান। সেখানে ৩/৪টি ছেলে তাকে বৃষ্টির ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করে তাকে বেঁধে মারধর শুরু করে এবং তার কাছে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা, মোবাইল, ক্যামেরা, এটিএম কার্ড নিয়ে যায়। এরপর নির্যাতন করে এটিএম কার্ড ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে ৬ হাজার টাকা তুলে নেয়। এরপর বাদীর মোবাইল নম্বর থেকে তার স্ত্রীসহ বিভিন্ন জনকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো মুক্তিপণ না পেয়ে বেলা ৪টার দিকে সাভার এলাকায় ছেড়ে দেয়। এরপর বাদী সাভার থানায় যান এবং পুলিশ আসামিদের কাছে অভিযোগ করেন।

পুলিশের এসআই আসামি এনামুল হক ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করেন এবং সব কিছু উদ্ধার করে আসামি বৃষ্টি, নয়ন কুমার, রণি ও অজ্ঞাত এক নারীকে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় আসার পর মামলার প্রস্তুতির এক পর্যায়ে পুলিশ বাদীকে আসামিদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন। না করলে উল্টো ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মামলায় বাদীকে আদালতে চালানের ভয় দেখান। বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে থানা ছাড়তে বাধ্য করেন। পরে বাদী জানতে পারেন যে, আটককৃতরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।  

ঢাকা/মামুন/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়