মৃত্যুদণ্ডই আসামিদের একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত: আদালত

রাজধানীর কাকরাইলে শামসুন্নাহার করিম ও তার ছেলে সাজ্জাদুল করিম সাওন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল করিম।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম বহুল আলোচিত মা-ছেলে হত‌্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত‌্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার আগে বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, আব্দুল করিম ওই হত‌্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘মহান আল্লাহ আমাদের যেসব নিয়ামত দান করেছেন, তার মধ্যে সুসন্তান অন্যতম। সন্তানের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল হলো তার পিতা। আর স্ত্রী হলেন সহর্ধমিনী, অর্ধাঙ্গিনী ও সন্তানের জননী। সে কারণে প্রত্যেক স্ত্রী তার স্বামীর কাছে সম্মানের পাত্রী। স্বামীর কাছে স্ত্রীর আছে বহুমাত্রিক অধিকার। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের সহায়ক ও পরিপূরক।’

সুরা বাকারার একটি আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, ‘মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, তারা তোমাদের আবরণ এবং তোমরা তাদের আবরণ।’

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড হলো আসামি আব্দুল করিম। যিনি মৃত শামসুন্নাহারের স্বামী ও সাজ্জাদুল করিম শাওনের পিতা। অথচ আব্দুল করিম নিজের অসৎ উদ্দেশ্য ও হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আসামি শারমিন আক্তার মুক্তা ও আসামি মো. আল আমিন জনির সঙ্গে পরিকল্পনা করে জনিকে দিয়ে নিজ স্ত্রী ও ঔরষজাত ছেলেকে নৃশংসভাবে হত্যা করিয়েছে। সে কারণে সকল আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে আদালত মনে করেন।’

বিচারক উল্লেখ করেন, ‘ইসলাম শান্তি ও সত্যের ধর্ম।’ সুরা মায়িদাহর আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, ‘যে কেউ কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করে, অন্য কোনো প্রাণের বিনিময় ব্যতীত কিংবা পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপরাধ ছাড়া, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করলো।’

আদালত মনে করেন, মৃত্যুদণ্ডই এই আসামিদের উপযুক্ত ও একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত। তাই আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।