মেয়েকে ধর্ষণ: বাবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান বিচারপ্রার্থীরা
মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম
পারিবারিক দ্বন্দ্বে অনেক সময় বাবা-মেয়ে, স্বামী-স্ত্রী আদালতে বিচারের জন্য মুখোমুখি দাঁড়ান। কিন্তু এ ঘটনা ভিন্ন। মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে কাঠগড়ায় বাবা। আসামির সর্বচ্চো সাজা চান বিচারপ্রার্থীরা।
বৃহস্পতিবার(২৮ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা বলেন, ‘আসামি কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া, আসামি নিজেও দোষ স্বীকার করেছেন। মামলার অন্যান্য আলামত, ডিএনএ আসামির সঙ্গে ম্যাচ করেছে। রায়ে আমরা সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী মহিবুল হাসান আপেল বলেন, ‘মামলার বিচার চলাকালে বাদী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। সে বলেছে, তার বাবা তাকে জন্ম দিয়েছে। সে বিচার চাই না। যেহেতু বাদী বিচার চাই না সেক্ষেত্রে আদালত বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।’
ভিকটিমের মামা বলেন, ‘আমার বোন ও তার স্বামীর যখন ডিভোর্স হয়ে যায় তখন ওরা দুই ভাই-বোন ছোট ছিল। নিজ হাতে যত্ন করে বড় করেছি। বাবা-মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি। একটু বড় হওয়ার পর তার বাবা কামাল হোসেন তাদের এসে নিয়ে যায়। ইচ্ছা থাকলেও তাদের আটকাতে পারিনি। এরপর তো এ ঘটনা। আমরা চাই এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৮/৯ বছর আগে ভিকটিমের বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর সে তার নানির কাছে থাকতো। ডিভোর্সের পর আসামি লিপি বেগম নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ভিকটিমকে তার বাবা রূপনগর আবাসিক এলাকার বস্তিতে নিয়ে যান। এ নিয়ে তার সৎ মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়। পরে ২ মে ভিকটিমকে নিয়ে তার বাবা বাড্ডার আব্দুল্লাহবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। ৪ মে এবং ৫ মে কামাল হোসেন ভিকটিমকে ধর্ষণ করেন।’
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ মে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ৯ মে আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবিন্দ দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন তিনি কারাগারে আছেন। এদিকে মামলা তদন্ত করে বাড্ডা থানার এসআই আল-ইমরান আহম্মেদ কামাল হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছর ১২ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।
গত ১৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
ঢাকা/মামুন/ইভা
আরো পড়ুন