ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যারা বই প্রকাশের জন্য মানুষ হত্যা করে, তারা সমাজ-রাষ্ট্রের শত্রু: আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৯, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৬:০০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১
যারা বই প্রকাশের জন্য মানুষ হত্যা করে, তারা সমাজ-রাষ্ট্রের শত্রু: আদালত

যারা বই প্রকাশের দায়ে মানুষ হত্যা করতে পারে, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। 

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার রায় ঘোষণা করেন।  রায়ের আগে পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন বিচারক।

পর্যবেক্ষণে বলা হয়, জিহাদের অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসাল আল ইসলাম বা আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের লক্ষ্য ছিল ব্লগার, লেখক ও প্রকাশকদেরকে হত্যা করে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বন্ধ করা এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও অসম্প্রদায়িক চরিত্র ধ্বংস করে দেওয়া।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল মানুষের কণ্ঠ স্তব্দ করে দেওয়া এবং মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বন্ধ করে দেওয়া এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও অসম্প্রদায়িক চরিত্র ধ্বংস করে দেওয়া।  ব্লগার অভিজিত রায়ের বই প্রকাশ করার জন্য জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ও প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়। আনসার আল ইসলামের সদস্যরা সাভারে ব্লগার রিয়াদ মোর্শেদ বাবুকে হত্যা করে। একই দিনে শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন এবং লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর প্রকাশক টুটুলের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।

বিচারক বলেন, লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকদের হত্যার অংশ হিসেবে অভিজিত রায়ের বই প্রকাশের জন্য জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয়। আসামিদের মধ্যে ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার জন্য মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক নির্দেশ, প্রশিক্ষণ এবং মূল হত্যাকারীদের অর্থায়ন করায় এবং আসামি আকরাম পরিকল্পনা করায়, মইনুল হাসান শামীম অস্ত্র সংগ্রহ, খুনের পরামর্শ এবং মূল হত্যাকারীদের দিক নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ায় এবং মোজাম্মেল হুসাইন সায়মন ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার পরিকল্পনায় অংশ নেওয়াসহ ঘটনাস্থল রেকি করে। আ. সবুর হত্যাকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় এবং আবু সিদ্দিক সোহেল এবং খাইরুল ইসলাম ঘটনাস্থল রেকি করে এবং আসামি শেখ আব্দুল্লাহ অর্থ একস্থান থেকে অন্য স্থানে আনা নেওয়া করে ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাদের অভিন্ন অভিপ্রায় ছিল ব্লগার, প্রকাশক ও সমকামীদের হত্যার অংশ হিসেবে ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা। 

উল্লেখ‌্য, জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন- মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির, আবদুস সবুর ওরফে আবদুস সামাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল রিফাত, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব সাজিদ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের, চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব। 

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়