ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

এফআর টাওয়ারে আগুন: তদন্ত শেষ হয়নি দুই বছরেও

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২৮ মার্চ ২০২১  
এফআর টাওয়ারে আগুন: তদন্ত শেষ হয়নি দুই বছরেও

ফাইল ছবি

এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ঝরে যায় ২৭টি প্রাণ। নিহতদের পরিবার শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। ঘটনার পর পরই গঠিত হয় তদন্ত কমিটি, সবমহল থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় বিচারের।  কিন্তু মামলার তদন্তই শেষ হয়নি।  দেশবাসীর স্মৃতি থেকে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত মুছে গেলেও স্বজনহারা পরিবারগুলো বিচারের আশায় আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের আশা দ্রুত মামলার তদন্ত হয়ে বিচার শেষ হবে।

২০১৯ সালের এই দিনে (২৮ মার্চ) বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত দুই বছরেও শেষ হয়নি।  কবে তদন্ত শেষ হবে বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ২৪ দফা সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ। সর্বশেষ গত ৭ মার্চ মামলা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুস সোবহান প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী আগামী ১২ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (গুলশান জোন) উত্তরের জোনাল টিমের পরিদর্শক আব্দুস সোবহান বলেন, একমাস আগে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি।  অন্য মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা তেমনভাবে দেখা হয়নি।  যেহেতু দায়িত্ব পেয়েছি সেহেতু কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে মামলা তদন্ত শেষে চার্জশিট দেবো।  তবে কবে নাগাদ মামলার তদন্ত শেষ হবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি এ তদন্ত কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭১ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও হাসপাতালে ১ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন ৭৩ জন।  এছাড়া একই ঘটনায় আহত হয়ে ফ্যায়ারম্যান সোহেল রানাও মারা যান।  ওই ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন দত্ত ৩০ মার্চ বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলায় ওই ভবনের ১৯ তলা থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত বর্ধিত অংশের মালিক বিএনপি নেতা তাসভির উল ইসলাম, ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক ও রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুলকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়।  মামলায় অজ্ঞাতনামাদেরও আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পরই (৩০ মার্চ) বারিধারার নিজ বাসা থেকে তাসভির উল ইসলাম এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালত প্রত্যেকের (৩১ মার্চ) সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ৯ এপ্রিল তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারের ১১ দিন পর জামিন পান তাসভিরুল ইসলাম। আর এক মাস ৫ দিন কারাভোগের পর বছর ৬ মে মামলায় জামিন পান ফারুক। রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল বছর ২৩ জুন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক এবং লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল মামলায় আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দিচ্ছেন।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই বনানীর এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদনে এস এম এইচ আই ফারুক হোসেন, লিয়াকত আলী খান মুকুল, তাসভির-উল-ইসলাম এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট ইমারত পরিদর্শকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরে নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ১৬ থেকে ২৩ তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগে এফআর টাওয়ারের মালিক, রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যান এবং রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৫ জুন পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের উপ-পরিচালক আবুবকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়